Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলবে গ্রাম আদালতে ব্যবহৃত রেজিস্টার ও ফরমেট হস্তান্তর
Village Court

মতলবে গ্রাম আদালতে ব্যবহৃত রেজিস্টার ও ফরমেট হস্তান্তর

বিভিন্ন উপকরণাদি, দক্ষ জনশক্তি ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব এবং গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারের সুযোগ পাওয়া সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের সচেতনতার অভাব, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করে।

এরূপ প্রেক্ষাপটে, গ্রাম আদালত পরিচালনায় মুখ্য অংশীজনের ভূমিকা এবং করণীয় বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মতলব-উত্তর উপজেলা কনফারেন্স কক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এক প্রেস বার্তায় জানানো হয়, মতলব-উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা স্থানীয় সরকারের গ্রাম আদালত প্রকল্প বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মতলব-উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল হক ও ব্লাষ্টের জেলা সমন্বয়কারী ফেরদৌসী আক্তার।

সভা উপস্থাপনা করেন মতলব-উত্তরের উপজেলা সমন্বয়কারী মো. সগীর আহম্মেদ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, স্থানীয় বিচার প্রক্রিয়ায় তথা গ্রাম আদালতের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সমাজে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার ঘটানো, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া এবং সর্বোপরি ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে বিচারের নামে কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হয় সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি রাখতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি গ্রাম আদালতের বিচারিক প্যানেলের সকল সদস্যদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতা কামনা করেন।

তিনি আরো বলেন, স্বল্প সময়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা খুবই দরকার। একইসাথে গ্রাম আদালত কার্যকরীকরণের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে বিচারিক সেবা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনদের সচেতনতা বৃদ্ধিকরণসহ তাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিতকরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি আজকের এই আলোচনা সভা তা অনেকখানি পূরণ করবে।

মূল আলোচক নিকোলাস বিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি এবং এলাকার অন্যান্য অংশীজনদের মাঝে গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা এবং প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে তবে এটি গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করতে হবে। গ্রাম আদালতের চলমান প্রক্রিয়া, বিচারিক সেবা, সেবা প্রদান প্রক্রিয়া এবং সেবা প্রদান প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত উপকরণসমূহ যেমন: এজলাস, সাইনবোর্ড, রেজিষ্টার এবং ফরমেটের বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন।

আলোচনা সভায় সাদুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন, কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ছোবাহান, জহিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলী আক্কাস বাদল ও গজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মিয়া (হানিফ), ইউপি প্যানেল সদস্য, স্থানীয় গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভার শেষ পর্বে গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী প্রকল্প কর্তৃক মুদ্রিত গ্রাম আদালতে ব্যবহৃত বিভিন্ন রেজিষ্টার ও ফর্ম/ফরমেটসমুহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় আনুষ্ঠানিকভাবে অত্র উপজেলার প্রকল্পভুক্ত সকল ইউনিয়ন পরিষদসমূহের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন এবং অতি যতেœর সাথে এগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দেন।

গ্রাম আদালতে মামলা খরচ খুবই কম। দেওয়ানী মামলা জন্য ২০ টাকা এবং ফৌজদারী মামলার জন্য ১০ টাকা মাত্র। দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় মামলার ক্ষেত্রে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে রায় ঘোষণার এখতিয়ার গ্রাম আদালতে রয়েছে।

তবে গবাদী পশু চুরি ছাড়া অন্যান্য সাধারণ চুরির ক্ষেত্রে এ এখতিয়ার ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে ৫ জন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালতের বেঞ্চ গঠিত হয়। এতে সভাপতি হিসেবে থাকেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। বাকি চার জনের মধ্যে দুই জন মনোনীত করেন মামলার আবেদনকারী এবং অন্য দুই জন মনোনীত করেন প্রতিবাদী অর্থ্যাৎ যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত এলাকার কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধসমূহের সমাধান এবং গ্রামের দরিদ্র ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ -এর ক্ষমতাবলে সরকার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত স্থাপন করেছে।।

স্থানীয় সরকার বিভাগ, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা-ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প’ -এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় স্থানীয় সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ষ্ট্রাষ্ট (ব্লাষ্ট) এ সভার আয়োজন করে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ০৩ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭ বুধবার
ডিএইচ

Leave a Reply