Home / বিশেষ সংবাদ / শতাব্দীর প্রাচীনতম নির্দশন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ

শতাব্দীর প্রাচীনতম নির্দশন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ

মনোমুগ্ধকর নির্মাণশৈলীর জন্য বিখ্যাত শতাব্দী প্রাচীন চাঁদপুরের ‘হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ’। ঐতিহাসিক তথ্য মতে, ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ১৭ আশ্বিন মাও. আবুল ফারাহ জৈনপুরী (রহ.) এ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। মসজিদটির সৌন্দর্য মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের মেহরাবটি কাচের ঝাড়ের টুকরোখচিত। মসজিদের ভেতরের দেয়ালের প্রথম অংশে সুরা ইয়াসিন ও সুরা জুমা আরবি অক্ষরে চক্রাকারে লেখা রয়েছে। ১৯৫৩ সালে ১২২ ফুট উঁচু মিনারটি বসানো হয়েছে চারটি পিলারের ওপর। এ মিনারের পাদদেশে তথা নিচ দিয়ে প্রধান ফটক, যা চিন্তাশীল মানুষকে বিস্মিত করে।

ভেতর থেকে ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে ওঠা যায় একেবারে মিনারের সুউচ্চ চূড়ায়। ১১৮ ফুট উচ্চতায় ফানুসের মতো একটি টপ ও দু’হাত গোলাকার প্লাটফর্ম রয়েছে। হাজীগঞ্জ বাজারের মূল সড়ক থেকে মসজিদে প্রবেশের মূল ফটক নকশা আর মনোরম কালিমার নকশা মসজিদের জৌলুস বৃদ্ধি করেছে বহুগুণ। আহমদ আলী পাটোয়ারী তার জীবনে কোনো প্রকৌশলী ছাড়াই পবিত্র এ মসজিদের মেহরাব থেকে সুউচ্চ মিনার পর্যন্ত বিশাল মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন।

খুতবা পাঠের স্থানটি মূল্যবান পাথর ও টাইলসে সজ্জিত। মিনার ও মসজিদের ওপর রয়েছে তারকাখচিত তিনটি গম্বুজ। প্রতিদিন ৮টি মাইক দিয়ে আজান প্রচার করা হয়। হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের মোট আয়তন ২৮ হাজার ৪৫৫ বর্গফুট।

নারীদের জন্য এ মসজিদে পৃথক নামাজের স্থান রয়েছে। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ার জন্য জেলা ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাগম ঘটে প্রায় ২০ হাজার মানুষের এবং রমজান মাসে জুমাতুল বিদায় লক্ষাধিক মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করেন।

মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, ঐতিহাসিক এ মসজিদে প্রথম একচালা ঘরের ইবাদতখানা ছিল। পরে টিনের দোচালা তৈরি করা হয়। প্রথম জুমার আজান হয় ১৩৪৪ সালের ১০ অগ্রহায়ণ।

প্রথম জুমায় উপস্থিত ছিলেন অবিভক্ত বাংলার তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী একেএম ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, নওয়াব মোশারফ হোসেন ও নওয়াবজাদা খাজা নসরুল্লাহ। ওই নামাজে ইমামতি করেন পীরে কামেল আলহাজ মাওলানা আবুল বাশার জৈনপুরী (রহ.)। মসজিদটি পরিচালিত হচ্ছে নিয়ত–মানতের টাকায়। গঠন করা হয়েছে আহমদ আলী পাটোয়ারী ওয়াকফ এস্টেট।

স্থায়ী আয়ের উৎস হিসেবে করা হয়েছে কয়েকটি মার্কেট। বর্তমানে এগিয়ে চলছে দেশের অন্যতম বিশাল মার্কেট বিজনেস পার্ক (হযরত মকিমউদ্দিন রহ.সপিং সেন্টার)

বর্তমানে মসজিদকেন্দ্রিক ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক মসজিদ কমপ্লেক্স। এর মোতাওয়াল্লি, মহাপরিচালক হচ্ছেন প্রতিষ্ঠাতা ও ওয়াকিফ আহমদ আলী পাটোয়ারীর (রহ.) প্রপৌত্র ড.মো.আলমগীর কবির পাটোয়ারী। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মোতাওয়াল্লী হিসেবে রয়েছেন ড.আলমগীর কবির স্যারের বড় সন্তান প্রিন্স শাকিল আহমেদ সাহেব।

লিখেছেন : ব্যারিস্টার শাহরিয়ার, ১৮ মে ২০২০
এজি