Home / জাতীয় / অর্থনীতি / রোজার আগেই বেড়ে চলছে পণ্যের দাম
বেড়ে

রোজার আগেই বেড়ে চলছে পণ্যের দাম

শুকনো মরিচের দাম বেড়েই চলছে। গত এক সপ্তাহে আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৩০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে তারা আমদানি করা শুকনো মরিচ বিক্রি করেছেন ৫২০ টাকা কেজি দরে। এই সপ্তাহে তা বিক্রি করতে হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। তারা বলছেন, দেশি শুকনো মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ টাকা। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে যে শুকনো মরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হতো ১০০-১৫০ টাকায়, তা এখন ৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। বর্তমানে শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৫০-৫০০ টাকায় ওঠানামা করছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে আমদানি করা ভারতীয় মরিচ বিক্রি হচ্ছে (গুজরাটি) ৩২০-৩৭০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা মরিচের কেজি ৩৫০-৩৭০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পরে মরিচের দাম এতটা বেড়েছে।

বাজারে গুঁড়ো ডানো দুধ বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের তুলনায় ৭০ টাকা বেশি দামে। দোকানিরা গত সপ্তাহে ৮৮০ টাকায় ১ কেজি ডানো গুঁড়ো দুধ বিক্রি করলেও এই সপ্তাহে বিক্রি করছেন ৯৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ১২৫০ টাকায় ১ কেজি ইলিশ পাওয়া গেলেও এখন কিনতে লাগছে ১৪০০ টাকা। ১৮০ টাকা কেজি দরের দেশি আদা এই সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চিনির বাজারও উত্তপ্ত। এখনই প্রতিকেজি চিনি ১২০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন করে প্রতিকেজি চিনিতে দাম বাড়বে পাঁচ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চিনির দাম বেড়েছে প্রতিকেজিতে ২ শতাংশের বেশি।

বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সবশেষ গত বছরের ১৭ নভেম্বর খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছিল। নতুন করে দাম বাড়ায় চিনির বাজার লাগামছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের।

ক্রেতাদের দাবি, বাজারে এখন সব জিনিসের দাম চড়া। এখন প্রতিকেজি দেশি আদা ২০০ টাকায় ঠেকেছে। রসুনের দামও বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকা।

টিসিবি বলছে, গত বছর একই সময়ে দেশে আদার দাম মানভেদে ৫০-১১০ শতাংশ, রসুনের দাম ৪৫-১২৭ শতাংশ এবং শুকনো মরিচের দাম ৭৫-১৫২ শতাংশ কম ছিল।

এদিকে বাজারে ফের সরু চালের দাম বেড়েছে। বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা কেজি।

প্রতিকেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতিকেজি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের দামে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। কোনও কোনও এলাকায় প্রতি ডজন (১২ পিস) ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। তবে নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে এ দাম ১২৫ টাকা দেখা গেছে।

স্বস্তি নেই শীতের সবজিতেও। প্রায় প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৫-১০ টাকা বেশিতে। এর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ ঘাটতির কথা বললেও বাস্তবে তেমনটি দেখা যায়নি। এক কেজি বেগুন কিনতে লাগছে ৮০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। মুলার কেজিও এখনও ৩৫ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০, শসা ৫০ থেকে ৬০, টমেটো ৩০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শুক্রবার বাজারে কাতল মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টেংরা ছোট ৫০০ আর বড় ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকা।

বার্তা কক্ষ, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩