অর্থনীতি

রাজধানী শহরে পুরুষ যৌনকর্মীদের রমরমা পশরা

অ্যামস্টারডামের ডা ভালেনের কথা শুনেছেন? সারা বিশ্বের কামুক পর্যটকদের আলটিমেট ডেস্টিনেশন৷ তবে এই ক্ষেত্রে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো, ডা ভালেনে নারী যৌনকর্মীদের থেকে পুরুষ যৌনকর্মীদের চাহিদা বেশি৷ শুধু তাই নয় পুরুষ যৌনকর্মীদের বাজারদরও সেখানে নারীদের তুলনায় অনেক বেশি৷ এবার জাম্প কাট টু দিল্লি৷

নিশ্চয় ভাবছেন আমস্টারডাম থেকে হঠাৎ দিল্লির কথা কেন? কারণ আমাদের দেশের রাজধানী শহরে এখন পুরুষ যৌনকর্মীদের রমরমা পসার৷ ইন্টারনেট তো রয়েছেই, জিগোলোদের হাতের নাগালে পেতে পারেন এমন অনেক জায়গা রয়েছে নয়াদিল্লিতে৷ জামিয়া নগর, নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে গেলেই দেখা মিলবে তাঁদের৷ তবে কীভাবে চিনবেন?

হাতে লাল রুমালই এক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছে সিগন্যাল৷ এক একজন জিগোলোর একরাতের পারিশ্রমিক ২০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে৷ এবার প্রশ্ন হচ্ছে গ্রাহকদের অ্যাপ্রোচের ধরন ঠিক কেমন হবে? সেইক্ষেত্রেও কিছু কোড ওয়ার্ড চলতি রয়েছে৷ যে সমস্ত কোড ওয়ার্ড গ্রাহক এবং জিগোলোর মধ্যে প্রাথমিক কথপোকথনের মাধ্যম৷ এই সমস্ত কোডওয়ার্ডের মাধ্যমেই নানাধরণের যৌনতার সার্ভিসের কথা বলা হয়৷ সার্ভিস চার্টও বেশ দীর্ঘ৷ নানান ধরণের এরোটিস সার্ভিস তো রয়েছেই৷ সার্ভিস চার্জের রকমফেরে বৈচিত্রও অনেক৷

মানব সভ্যতার আদিমতম এই পেশার সঙ্গে যে সমস্ত পুরুষরা যুক্ত৷ তাঁরাই বলছেন, বয়ফ্রেন্ড সার্ভিস এখন সব থেকে বেশি লোভনীয় মহিলাদের কাছে৷ একাকীত্বে ভুগছেন এমন মহিলা এবং তরুণীরাই বয়ফ্রেন্ড সার্ভিস নিয়ে থাকেন৷ যার জন্য মোটা টাকা খরচ করতেও পিছপা হন না তাঁরা৷ শুধু মাত্র পারিশ্রমিক নয়, জিগোলোদের নিয়ে দিল্লির বিলাসবহুল হোটেল, রিসর্টেও সময় কাটান মহিলারা৷

দিল্লির এক জিগোলোর কথায়, ‘‘ইঞ্জিনয়ারিংয়ের ছাত্র আমি, পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছিলাম না, এক বন্ধু মারফত প্রথম এক গ্রাহকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল৷ তার কাছ থেকেই পরে অন্যান্য মহিলাদের যোগাযোগ পাই, এখন প্রত্যেকদিনই কল পায়, বেশিরভাগটাই হোটেল সার্ভিস৷ শুরুর দিকে বিষয়টি মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও, টাকাটা আমার প্রয়োজন৷’’

টাকার জন্যই অনেক যুবক এই পেশায় আসছেন ঠিকই৷ কিন্তু অনেকেই আবার সখের জিগোলো৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফ্রি সার্ভিসও দিয়ে থাকেন৷ যে সমস্ত মহিলরা জিগোলোদের সার্ভিস নিয়ে থাকেন, তাঁরা কারা? আপনি যদি মনে করে থাকেন, কর্পোরেট দুনিয়ার হাই সেস্টাসের ছাপ রয়েছে এমন মহিলারা৷ তাহলে একেবারেই ভুল, দিল্লির বেশিরভাগ জিগোলোরাই জানাচ্ছেন, কলেজ স্টুডেন্ট এবং মধ্যবিত্ত ঘরের মহিলারাই তাঁদের নিয়মিত কাস্টমার৷ কিন্তু কেন?

জিগোলারা বলছেন, সেক্স অ্যাডভেঞ্চার যেমন এর একটি কারণ তেমনই একাকিত্ব দূর করতেই তাঁদের ডাক বেশি পড়ে৷ এমন বহু মহিলা আছেন যাঁরা জিগোলোদের বেড রুমে ডেকে সারা রাত শুধুই গল্প করে কাটিয়ে দেন৷ আবার এমন অনেক মহিলা আছেন যাঁদের ওয়াইল্ড ব্যাপারস্যাপার অনেক সময় অত্যাচারের পর্যায়ে চলে যায়৷ সিগারেটের ছ্যাঁকা থেকে শুরু করে যৌনক্রীয়ার সময় নানারকম অস্বাভাবিক পজিশন প্রায়ই কিছুই বাদ যায় না৷ তাই জিগোলো হওয়া মানেই যাঁরা মনে করেন সেক্স উইথ ইনকাম৷ ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই অত সহজ নয়৷

অন্যদিকে আরও একটি প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের নজর এড়িয়ে খোদ রাজধানীর বুকে এই সব চলছে কীভাবে? জিগোলোরা জানাচ্ছেন, লাল রুমালের সিগন্যাল, কোড ওয়ার্ড এই সব জানা পুলিসের৷ কিন্তু পুরুষ যৌনকর্মী নিয়ে তেমন কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পুলিস তেমন পায়নি৷ তা ছাড়াও পুরুষ যৌনকর্মী বিষয়টিও আজও ভারতের মতো দেশে অনেকটাই আরব্য রজনীর মতো৷ তাই বিষয়টি আটকাতে পুলিসের তেমন কোনও উৎসাহ নেই৷

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৫:৫৩ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

এমআরআর  

Share