মতলব দক্ষিণ

মতলব ধনাগোদায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে ৯ শতাধিক অবৈধ ফাঁদ

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর উপজেলার মধ্যবর্তী ধনাগোদা নদীতে ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁশের বেড়া ও জাগ পেলে অবৈধভাবে মাছ ধরছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা । ফলে ডিমওয়ালা সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ নিধন হচ্ছে। এছাড়া বাঁধের কারণে নৌ-যান চলাচল ও পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) নদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দু’উপজেলার মধ্যবর্তী ধনাগোদা নদীর প্রায় ২০ কিলোমিটারের মধ্যে দু’পাশে ও মাঝে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে জাগ দেওয়া হয়েছে। বাঁশের বেড়ার সাথে মশারীর জাল চারদিকে আটকানো। পানির উপরিভাগ থেকে নদীর তলদেশ পর্যন্ত এ জাল ছড়িয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় মাছ ধরছে।

তারমধ্যে পুঁটি, টেংরা, বেলে, রুই, কাতলা, আইড়মাছ সহ দেশী জাতের ডিমওয়ালা মাছ ধরছেন জেলেরা।

এ ব্যাপারে মতলব দক্ষিণ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফারহানা আক্তার রুমা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘১৯৫০ সালের মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন মোতাবেক নদী বা প্রবাহমান ¯্রােতধারায় বেড়া বা বাঁধ দিয়ে যেকোন মাছ শিকার করা দন্ডনীয় অপরাধ।’

মতলব পৌরসভার চরমুকুন্দী গ্রামের জয়নাল বকাউল, মোঃ শাহালম, জামাল উদ্দিন, মোঃ ফরিদ, পশ্চিম বাশপুরের রামেশ্বর দাস সহ ২৫ থেকে ৩০ জন স্থানীয় নিজ নিজ এলাকায় নদীতে বাঁশ বসিয়ে মাছ ধরছেন। বাইশপুর এলাকার ২-৩ জন জেলে বলেন তারা শুধু জালের মাালিক। বেড়ার মালিক বালু চর গ্রামের মেজু ও মোঃ ফয়েজ। তাদের পেছনে আছেন চন্দন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তবে তার নাম বলতে অস্বীকৃতি জানান।

মোঃ ফয়েজ ও মেজুর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। সিপাইকান্দি এলাকার এক জনপ্রতিনি জানান, এভাবে মাছ নিধন করলে দেশি প্রজাতির মাছ শেষ হয়ে যাবে। এসব বন্ধ করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।

মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের এবং স্থানীয় সূত্রে মতে জানা যায় ২-৩ বছর ধরে ধনাগোদা নদীর ২০ কিলোমিটার দূরে মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরমুকুন্দী, কাজির বাজার, উদ্দমদী, সাহাপুর, চরলক্ষীপুর, মাছুয়াখাল, উত্তর বাইশপুর, নায়েরগাঁও, বাইশপুর এবং মতলব উত্তর উপজেলার কালির বাজার, দূর্গাপুর, আমুয়াকান্দা, লক্ষীপুর, নন্দলালপুর, ঠেটালিয়া, আমিরাবাদ, বিনন্দপুর, গাজীপুর, এনায়েতনগর, কালিপুর সহ প্রায় ৩০টি এলাকায় বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় গড়ে ২৫ থেকে ৩০টির বেশি বেড়া পাতা হয়েছে। এর মধ্যে ফেরীঘাট এলাকায় ১০টি, নায়েরগাঁও ৪৫টি, আমিরাবাদে ৫০টি, কালিপুরে ৪৫টি, কাজির বাজারে ৩০টি, পশ্চিম বাইশপুরে ৩০টি, চরমুকুন্দী ২০টি, সিপাইকান্দি ৩০টি, পশ্চিম বাইশপুরে ৩০টি সহ ৯শতাধিক বেড়া পাতা হয়েছে। সূত্রমতে আরো জানা যায় প্রতিটি বেড়ায় ২ মেট্টিকটন করে ৯শতাধিক বেড়ায় প্রায় এক হাজার ৮০০ মেট্টিক টনের বেশি মাছ নিধন ধরা হয়েছে। এসব মাছের বাজার জাত মূল্য প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) শহিদুল ইসলাম এবং মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বেড়া সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে বেশ কয়েকটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা বেড়া সরাননি। শীঘ্রই এ বেড়ার বিরুদ্ধে অভিযানসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিবেদক- মাহফুজ মল্লিক
: : আপডেট, বাংলাদেশ ৪: ২৩ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share