পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনজীবীদের রোষানলে পড়লেন দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) প্রথম আলোর এ প্রতিবেদক ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার নথি দেখতে গেলে তাকে আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দায়ের করে কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি।
জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি আইন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও তাকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম। এক বিবৃতিতে ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বলেন, এই মিথ্যা মামলা দায়ের করে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও যারা আসাদুজ্জামানের ওপর নির্যাতন করেছে তাদের শাস্তি দাবি করছে ফোরাম।
ইউনাইটেড কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কর্মকারও অনুরূপ এক বিবৃতি দিয়ে আসাদুজ্জামানের মুক্তি দাবি করেন। একই সংঙ্গে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্তকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ বলে দাবি করা হয়।
কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম উপদেষ্টা সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়নি। ল’ রিপোর্টাস ফোরামের সাবেক সভাপতি এম বদি-উজ-জামান, কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আশরাফ-উল-আলমও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের নিন্দা জানান। এ ঘটনা সাংবাদিকদের মত প্রকাশে বাধা বলে মনে করছেন সাংবাদিক নেতারা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে আসাদুজ্জামান ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার নথি দেখছিলেন। এ সময় ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে- নথি কেন দেখেন? আপনি কে? এমন প্রশ্ন করেন। আসাদুজ্জামান পরিচয় দেয়ার পর তাকে টেনে হিচড়ে আইনজীবী সমিতিতে নিয়ে আসা হয়। পরে আদালত সাংবাদিকরা সেখানে ছুটে যান। প্রথম আলোর আদালত প্রতিবেদকসহ অন্য একজন প্রতিবেদকও সেখানে যান।
প্রথম আলোর আদালত প্রতিবেদক প্রশান্ত কর্মকার সাংবাদিকদের জানান, সমিতির সভাপতির সঙ্গে কথা আসাদুজ্জামানের হয়। সভাপতি তাকে কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন। তিনি বলেন, আসাদুজ্জামান আর কোর্ট এলাকায় আসবেন না ও এই আদালত নিয়ে সংবাদ লিখতে পারবেন না। এ ধরনের মুসলেকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। এই প্রস্তাবে আসাদুজ্জামান রাজি না হলে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোতোয়ালী থানার পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি অবশ্য বলেন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান মিথ্যা পরিচয় দিয়ে নথি দেখছিলেন ও নথির ছবি তুলছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ নথির কিছু হারিয়ে যেতে পারতো। তাই তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঈদের আগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মাদক মামলার আসামিরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে এবং মঙ্গলবার তিন জঙ্গি নেতার বিচারে অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না- এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের কারণে আইনজীবী সমিতির কর্মকর্তারা অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯:০০ এএম, ১৩ জুলাই ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur