হাজীগঞ্জে ১৩০ বছর বয়সী মায়ের সেবা বিঘ্নিত

দেশে মানুষের বেচেঁ থাকার গড়ায়ু ৬০ থেকে ৭০ বছর। সেখানে যদি দ্বিগুণ বয়সী মানুষের দেখা মেলে তাহলে অনেক কিছু জানার কৌতূহল জাগে। এমনি এক বৃদ্ধের সন্ধান পাওয়া যায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বলাখাল ওলিউল্ল্যাহ সর্দার বাড়ীর মৃত হাবিবউল্ল্যাহ মুন্সীর স্ত্রী রহিমা বেগমের বর্তমান বয়স প্রায় ১৩০ বছর। প্রায় ৫০ বছর পূর্বে স্বামীকে হারিয়েছে। চার ছেলে চার মেয়েসহ বড় একটি পরিবারের দায়িত্বে ছিলেন রহিমা। কিন্তু বয়স যখন শত পার করেছে তখন আর শরীরের সাথে দায়িত্বভার ঘরের এক কোণে লুকিয়ে যায়। আর সে থেকে আস্তে আস্তে পরিবারের লোকজন আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু বৃদ্ধ রহিমার বয়স যত বাড়ছে ততই যেন তার সময়টা জটিল হয়ে উঠেছে। সন্তানদের পরিবারের মাঝে দেখা দেয় ভাগ ভাটরার দূরত্ব।

বৃদ্ধ রহিমা বেগমের বড় দুই ছেলে ও দুই মেয়ে মৃত্যুকালে বয়স ছিল ৭০ থেকে ৮০ বছরের উপরে। বর্তমানে দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তির জটিলতা দেখা দেওয়ায় রহিমার বাকী জীবনে দেখা দিয়েছে বাচাঁর জটিলতা। এর আগে স্বামী মৃত্যুর পর ইচ্ছা করে নেয়নি কোন বয়স্ক বা বিধবা ভাতা।

বৃদ্ধের দুই মেয়ে শাহিদা ও নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের ভাই আবুল বাসার ও খলিলুর রহমানের মধ্যে জায়গা জমিনের বিরোধ দেখা দেয়। যে কারনে মাকে নিয়ে এক প্রকার টানাটানি শুরু হয়েছে। তার সেবা করারমত যেন কারও সময় নাই। তারা এখন মামলা জড়িয়ে মায়ের থাকার মত পরিবেশ নেই বললেই চলে।

খলিলুর রহমানের বড় মেয়ে রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমার জেটা আবুল বাসার সু-কৌশলে শত বৎসর বয়সী দাদির কাছ থেকে প্রায় ১৩ শতাংশ জায়গা লিখে নেয়। আমার বাবা খলিলুর রহমান পরিবারের ছোট ছেলে হিসাবে দাদার ঘর পেয়ে মেরামত করেছি। কিন্তু গত মাসে আমার জেটা আবুল বাসার ও তার ছেলে নুরে আলম জোরপূর্বক দাদার দেওয়া ঘর উচ্ছেদ করে সেখানে নতুন ঘর তৈরি করে দখল করেছে।

স্থানীয় ভাবে বসার পর তারা বলে আমরা নাকি কোন জায়গাজমি পাবো না। অথচ ফুফুদের কাছ থেকে ওয়ারিশ সম্পত্তি ৬ শতাংশ ও দাদার সম্পত্তির পাওনা ৪ শতাংশ আবুল বাসার জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছেন। তাই বাধ্য হয়ে থানায় ঘর উচ্ছেদের অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু দাদির খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য স্বামীর বাড়ি থেকে এই ঘরে উঠেছি। কিন্তু যেটা আবুল বাসার বিদ্যুতের সংযোগটি পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে।

আবুল বাসার বলেন, বৃদ্ধ মা আমার ঘরে থাকেন খান তা সবাই জানে। মায়ের নিজ অংশ থেকে কিছু সম্পত্তি আমাকে দান করেছেন। আমার ভাই খলিলুর রহমান মায়ের কোন খোঁজ-খবর নেন না।

স্থানীয় কাউন্সিলর মাঈনুদ্দিন মিজি বলেন, এই পরিবারের ১৩০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মায়ের সন্তানরা যে যার মত জীবনযাপন করছেন। দুই ভাইয়ের জটিলতার কারণে মায়ের সেবা কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে এ ভেবে আমি নিজ উদ্যোগে বসার আহবান জানিয়েছি।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ৬ অক্টোবর ২০২১

Share