Home / চাঁদপুর / মশার উপদ্রব : মেয়রের হস্তক্ষেপ চায় চাঁদপুরবাসী
মশার উপদ্রব : মেয়রের হস্তক্ষেপ চায় চাঁদপুরবাসী

মশার উপদ্রব : মেয়রের হস্তক্ষেপ চায় চাঁদপুরবাসী

শীতের পূর্বাভাস ও আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে চাঁদপুরে বাড়ছে মশার অসহনীয় উপদ্রব। তার সাথে যোগ হয়েছে শহরের অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশ। যা মশার বংশ বিস্তারের সহায়ক। আর এ কারণে সম্প্রতি চাঁদপুরে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে বহুগুণ।

এদিকে মশা নিয়ন্ত্রণে চাঁদপুর পৌরসভা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সাধারণ মানুষ মশার কামড়ে অনেকটাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি নানা বয়সী মানুষের সাথে-সাথে শিশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সাধারণ মানুষ সমস্যা সমাধানে পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

জানা গেছে, মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার কারণে ভুক্তভোগী শহরবাসী ম্যালেরিয়াসহ ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছেন। এখনো ডেঙ্গু কিংবা ম্যালেরিয়ার আশঙ্কা দেখা না গেলেও আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষের। দ্রুত সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পৌরবাসী।

চাঁদপুর শহরবাসীর অভিযোগ শহরের অভ্যন্তরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় হঠাৎ করেই মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোর খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা দীর্ঘদিন ধরে পরে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা তা অপসারণে ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রতিনিয়ত মশার উপদ্রব বাড়ছে।

এছাড়া দু’বছর আগে নির্মিত ড্রেনগুলোর উপরিভাগে স্ল্যাব দেয়ার কথা থাকলেও তা না দেয়ায় সেখানে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে দ্রুত। এতে ড্রেনের পার্শ্ববর্তী বাসা-বাড়িতে মশার উৎপাত মারাত্মক বেড়ে গেছে। ঐসব ড্রেনগুলো স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে দিলে মশার উপদ্রব কিছুটা কমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে শহরের অধিকাংশ বাসা-বাড়িতে সাধারণ মানুষ মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে কয়েল, বিভিন্ন মশানিধক স্প্রে জাতীয় লিকুইড রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করছে। এ কারণে অনেকেই শ্বাস-কষ্টসহ দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন হওয়ায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেলেও সংশ্লিষ্টরা নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করলে তার সত্যতাও মিলে।

চাঁদপুর পৌরসভার জনস্বাস্থ্য ও স্যানেটারি বিভাগ মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে এখনো কোন ব্যবস্থা নেননি বলে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রতিবছর ডিজেল-কেরসিন ও ওষুধের সমম্বয়ে ‘ফগার’ মেশিনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে শহরের সর্বত্র মশা নিধন করে থাকেন। এ বছর এখনো তেমন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।

পৌর জনস্বাস্থ্য বিভাগের সিআই ও শহর পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা অরুপ কুমার শ্যাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এখনো প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী সরবরাহ করা না হওয়ায় মশা নিধনে ব্যবস্থাগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পৌর জনস্বাস্থ্য বিভাগের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, মশা নিধনে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। অল্প সময়ের মধ্যে মশার ওষুধ, ডিজেল ও অকটেন সরবরাহ নিশ্চিত হলেই শহরের সর্বত্র ‘ফগার মেশিন’ দিয়ে তা ছিটানো হবে বলে তিনি জানান।

এখনো কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, আবাসিক এলাকায় খোলা জায়গায় মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখে। ফলে মশার উপদ্রব কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। খোলা জায়গাগুলো স্ব-স্ব মালিক বেড়া দিয়ে রাখলে কেউ আবর্জনা ফেলতে পারবে না। এছাড়া রাস্তায় ময়লা ফেললে পৌরসভা তা নিয়মিত পরিস্কার করে থাকে বলে তিনি দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চাঁদপুর পৌরসভার বাজেটে শহরের মশা নিধনে ওষুধ ক্রয় বাবত ১৫ লাখ টাকা, ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারে ১৫ লাখ টাকা এবং নর্দমা পরিস্কারে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। তারা মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রেজাউল করিম 

 

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৭:৪৭ পিএম,০২ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার

এমআরআর