নিশ্চিত মৃত্যুপথযাত্রী মনিবকে দেখতে ঘোড়া গেল হাসপাতালে। আর মনিবের কাছে পৌঁছাতে দুই ঘোড়া পাড়ি দিয়েছে ১৫০ মাইল। হাসপাতালে ঢুকেই বিছানায় মুমূর্ষু মনিবের মুখে ও চোখে তারা করেছে চুম্বন।
এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।বিশ্বজুড়ে তোলপাড় করা এ ঘটনা পৃথিবীর সব মানবিকতাকেও হার মানিয়েছে।
রিংগো ও সুগার নামে ওই দুই ঘোড়ার প্রাক্তন মনিব রবার্তো গঞ্জালেস পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত। তিনি টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও ভিএ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর আগে প্রিয় ঘোড়া দুটি দেখতে চান গঞ্জালেস।
তার ইচ্ছানুযায়ী রিংগো ও সুগারকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। ১৫০ মাইল পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে আনা হয় রিংগো ও সুগারকে।
গঞ্জালেস ভিয়েতনামে দুই মাস চাকরি করেছিলেন। চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় তিনি ১৯৭০ সালের ২১ মে গুলিবিদ্ধ হন।এরপর তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাই তিনি আর চাকরি করতে পারেননি। পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থাতেই ১৯৭০ সাল থেকে ঘোড়ার প্রশিক্ষকের কাজ করছেন। তিনি ঘোড়াকে খুব ভালোবাসেন। দীর্ঘদিন প্রশিক্ষক থাকায় ঘোড়ার সঙ্গে তার দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কিন্তু ১০ মাস ধরে তিনি হাসপাতালে আছেন। কথাও বলতে পারেন না। হাসপাতালে ঘোড়া দুটি দেখে যেন তিনি শক্তি ফিরে পেয়েছেন।
গঞ্জালেসের স্ত্রী রোসারিও বলেন, ‘ঘোড়া দুটি তার জীবন। আমরা ঘোড়া দুটিকে ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে লালনপালন করছি। আমার স্বামী ঘোড়া ভালোবাসে। ঘোড়াকে খাওয়াতে ও লালনপালন করতে ভালোবাসে। তিনি ঘোড়াদের সেবা করার জন্য গর্ববোধ করেন।’
তিনি জানান, তার স্বামী টেক্সাসের একমাত্র প্রতিবন্ধী ঘোড়ার প্রশিক্ষক। তবে তার প্রতিবন্ধীত্ব কোনোভাবেই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
‘তিনি কথা বলতে পারেন না। কিন্তু ঘোড়াদের দেখার পর তার চোখে আবেগ দেখা গেছে। ঘোড়া দেখে তার চোখ খুলেছে। ঘোড়া দুটি তার চোখে ও মুখে চুম্বন করেছে’ বলেন রোসারিও।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন কঠিন সময় পার করছি। কিন্তু ঘোড়া দুটির হাসপাতালে আসার ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
স্বামীর অসুস্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা খুব বেশি আশাবাদী নয়। কিন্তু আমরা আশা ছাড়িনি। আমরা সব কিছু সৃষ্টিকর্তার হাতে ছেড়ে দিয়েছি।’
হাসপাতালে ঘোড়া দুটিকে নিয়ে গঞ্জালেসেরআবেগময় সেই দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওটি পাঠকদের জন্য দেওয়া হলো-
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:০০ এএম, ২৬ মে ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ