Home / চাঁদপুর / মতলব ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের বেহাল দশা : মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পর্যটক
Shatnol

মতলব ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের বেহাল দশা : মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পর্যটক

ব্র্যান্ডিং জেলা চাঁদপুরের একাধিক পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম মতলব উত্তরের ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘদিন থেকে এটি পর্যটকদের আনাগোনায় ‍মুখরিত থাকলেও এখন মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, কেন্দ্রসংলগ্ন একাধিক পোল্ট্রি খামার গড়ে ওঠায় বিনষ্ট হচ্ছে পর্যটনের পরিবেশ। বিগত ২০০০ সালে সরকারিভাবে এটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণার পর দ্রুত এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। একসময় এখানে সারাবছর পর্যটকের ভিড় থাকলেও বর্তমানে কমে গেছে পর্যটকের সংখ্যা।

এমন বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে স্থানীয়রা অনুমতি ছাড়া গড়ে ওঠা পোল্ট্রি খামারগুলোকে দায়ী করছেন।

ওই এলাকায় গিয়ে জানা যায়, ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের কিছু জমি দখল করে ২০১৬ সালের শেষের দিকে অবৈধভাবে গড়ে উঠে পোল্ট্রি খামার। বর্তমানে ৪টি মুরগির খামার রয়েছে সেখানে।

খামারগুলোতে প্রায় ৭ হাজার মুরগী রয়েছে। এদের বিষ্ঠা ফেলার কোনো সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই। উন্মুক্ত অবস্থায় যত্রতত্র বিষ্ঠা ফেলে আশেপাশের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত করছে খামারগুলো। এ কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠা ষাটনল পর্যটন থেকে পর্যটকরা এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। মাত্রারিক্তভাবে কমে গেছে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পর্যটক সংখ্যা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীত মৌসুমে শুক্রবারসহ সরকারি ছুটির দিনে প্রতিদিন পিকনিক পার্টি নিয়ে বড় আকৃতির ৪/৫টি লঞ্চ এখানে আসলেও গত ২ বছর যাবত্ তা আর আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। পর্যটন স্পটে গড়ে উঠা ৪টি মুরগির খামারের দুর্গন্ধের কারণে পর্যটকরা ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

পর্যটন কেন্দ্রসংলগ্ন ষাটনল লঞ্চঘাট এলাকার কয়েকজন দোকানদার জানান, সারা বছর কম-বেশি লোক আসলেও বর্তমানে পোল্ট্রি খামারের দুর্গন্ধের কারণে পর্যটকদের বা পিকনিক পার্টির ছোট ছোট দলগুলোও কম আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন, মনির হোসেন, লিয়াকত, জহিরুল, শাকিল ও নয়ন জানায়, আমরা একসময় পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণভাবে দোকনদারি করতাম। কিন্তু আগের মতো লোকজন না আসায় এখন এসব প্রায় সবই বন্ধ।

অভিযোগ রয়েছে, পোল্ট্রি খামার স্থাপনে পরিবেশের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হলেও এখানে গড়ে উঠা ৪ পোল্ট্রি খামারের কোনোটারই পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। নেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারও। এ ছাড়া যেখানে-সেখানে ফেলা হচ্ছে খামারের মুরগির বিষ্ঠা।

এ ব্যাপারে খামারী বুলবুলের সাথে কথা হলে সে জানায়, আমরা এখানে অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছি। এখন পোল্ট্রি খামার বন্ধ করে দিলে কি কাজ করবো?

পোল্ট্রি খামার গড়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসেন বলেন, খামার স্থাপনে পরিবেশ ছাড়পত্রের পাশাপাশি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেয়া বাধ্যতামূলক। ষাটনলের পোল্ট্রি খামারগুলো এখনো রেজিস্ট্রেশন করেনি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ থাকলেও লোকবলের সল্পতার কারণে আমরা তা পারছি না।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুভাশীষ রায় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন যেহেতু জানলাম দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, বিষয়টি আমার নজরে আসার পর খামার মালিকদের সাথে কথা বলেছি। পর্যটনের স্বার্থে খামারগুলো বন্ধের ব্যাপারে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবশ্যই নেয়া হবে। উৎস- ইত্তেফাক

বার্তা কক্ষ ২০১৮

Leave a Reply