মতলব উত্তর

মতলবে ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে গুচ্ছ প্রকল্প অনুমোদন

চাঁদপুরের মতলবে ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কি.মি বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজের জন্যে জেলা মহাসড়কের একটি গুচ্ছ প্রকল্প প্রস্তাব একনেক বৈঠকে সোমবার (৯ এপ্রিল) অনুমোদন লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রী পরিষদ সভায় এ অনুমোদন প্রদান করেন। এ প্রকল্পটি কুমিল্লা বিভাগীয় জেলা মহাসড়কের একটি গুচ্ছ প্রকল্প ।

মতলবের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী মো.ইকবাল চাঁদপুর টাইমসকে বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রায়ই সমাপ্তের পথে মতলব উত্তর ও দক্ষিণের সেতুবন্ধন হিসেবে খ্যাত ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মতলব সেতু’র উত্তর প্রান্ত থেকে দাউদকান্দি মহাসড়কের চাঁদপুর অংশের সংযোগ সড়কের মেঘনা ধনাগোদা বেড়িবাঁধের ৬০ কি.মি.’র মধ্যে ২২ কি.মি প্রশস্থকরণ ও কার্পেটিং কাজের জন্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। অনুমোদিত প্রকল্প প্রস্তাবটি প্লানিং কমিশন থেকে আসলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী মো.ইকবার জানান, ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরে আসলে ৯৮ ভাগ কাজ সমাপ্তের পথে মতলববাসীর প্রাণের দাবি মতলব সেতুর উদ্বোধন করেন। যার কাজ জুন মাসের মধ্যেই শেষ হবে।

এটির চাঁদপুর জেলা সদরসহ নোয়াখালী,লক্ষ্ীপু, ফেণী জেলার মানুষের ঢাকা যেতে ও ঢাকা থেকে আসতে সময়,যানজট ও অর্থ সাশ্রয় হবে। চমৎকার যোগাযোগ মাধ্যম সৃষ্টি হবে। ভোগান্তিও কম হবে। যার ফলে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাবে। তাই বেড়িবাঁধের পূর্বের ৩ দশমিক ৭ মিটার থেকে ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্থ করার জন্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ গুচ্ছ প্রকল্পটি পেশ করে।

তিনি আরো বলেন,‘সেতুটি চালু হলে মতলববাসীর দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্নপূরণ হবে । ঢাকা যাতায়তে সময় ও দূরত্ব কমে যাবে । মতলব উত্তরও দক্ষিণের সাথে সেতুবন্ধন ,মৎস্য ,খাদ্যশষ্য,অন্যান্য কৃষিপণ্য ও উৎপন্ন মালামাল পরিবহনে সহজতর ও সাশ্রয় হবে। প্রবাসীদের যাতায়তের সুবিধা ও ব্যবসাÑবাণিজ্যের নতুন নতুন মাত্রা যোগ হবে।’

প্রসঙ্গত, চাঁদপুর জেলায় অবস্থিত ধনাগোদা মেঘনার একটি শাখা নদী। এটি মতলব শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহমান। ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উত্তর মতলব উপজেলা গঠিত । ওই নদীটির কারণে জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অনুন্নত সড়ক যোগাযোগের কারণে খাদ্যশস্য এবং শিল্পজাত পণ্য স্বল্পসময়ে দেশের অন্যত্র পৌঁছানো সম্ভব হতো না।

এখন মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার ৭ লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি হবে। নোয়াখালী ও মাদারীপুরসহ দেশের পশ্চিমাংশের জেলাসূমহের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও সহজতর হবে।

বর্তমানে হরিণা-ভাটিয়ালপুর সড়কের সাথে একটি ফেরি চালু রয়েছে কিন্তু যাত্রী সাধারণ ও মালামাল পরিবহনের জন্যে তা’খুবই অপ্রতুল এবং অধিক সময় ব্যয় হয়।

সেতুটির ৩ শ’৪ দশমিক ৫১ মিটার আরসিসি দৈর্ঘের ,অ্যাপ্রোচ সড়কের ওপর ৩০ দশমিক ৫০ মিটার একটি সেতু ,১২ মিটার দু’টি আরসিসি কালভার্ট , ১০ মিটার দু’টি আরসিসি আন্ডারপাশ, ১ দশমিক ৮৬ কি.মি.সার্ফেসিং এবং নতুন পেভমেন্ট তৈরি, ৯ দশমিক ৩৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও ৩ দশমিক ২৩ লাখ ঘনমিটার সড়ক বাঁধ, জিও টেক্সটাইল, টো-ওয়াল,সার্ফেস ড্রেন,দু’টি ইন্টারসেকশন আইল্যান্ড এবং সাইন, সিগন্যাল ইউটিলিটি সিফটিংসহ আনুসাঙ্গিক কাজ করার কথা রয়েছে। ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের সেতুতে ৭টি স্প্যান থাকবে। সেতুর দু’পাশে অ্যাপ্রোজ সড়কটি থাকবে ১ ধশমিক ৮৬ কি.মি।

চাঁদপুরের সওজ বিভাগ ইতোমধ্যেই প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁদপুর পৌরসভার ভেতর ওয়্যারল্যাস থেকে ইলিশচত্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৭শ’ মিটার সড়কের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে।

এ ছাড়াও লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষীপুর-বেগমগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬০ কি.মি সড়কের ৫ দশমিক ৫ মিটার সড়কের দু’পাশে ৭ দশমিক ৩ মিটারে প্রশস্থকরণ এবং চাঁদপুর অংশের মোস্তফাপুর,-মাদারিপুর-শরিয়তপুর-হরিণা-চান্দ্রা-ভাটিয়ারপুর জেলা সড়কের প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১১ কি.মি.সড়কের কাজ ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান ।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:১০ পিএম,১২ এপ্রিল ২০১৮,বৃহস্পতিবার
এজি

Share