Home / শিল্প-সাহিত্য / ভাষার প্রতি ভালোবাসা
ভাষার প্রতি ভালোবাসা

ভাষার প্রতি ভালোবাসা

বইমেলা শেষ অচিরেই। এবারের বইমেলা ২৯ দিনে হয়েছে। কথায় আছে “যায় দিন ভালো আর আসে দিন খারাপ।” কিন্তু যে দিনগুলো যায় তাতো এসেই যায়। বইমেলা তথা একুশে ফেব্রুয়ারী আসলে আমাদের বুকের ভিতর ভালবাসা তিন ধাপে বেড়ে যায়। ১. বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ২. একুশে ফেব্র“য়ারী আর ৩. ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা।

কিন্তু ভালো দিনগুলো চলে যায় আমৃত্যু আমরা তো থেকে যায়। দিন যায় যাবেই। ৪৭ এ দেশ ভাগ ৫২এ বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা অর্জন ৭১এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা তথা বিশ্ব মানচিত্রে বাংলা নামের দেশের নাম খচিত করা তিন দিনের কাজ হলেও অতীতের প্রেরণা আর দির্ঘ্যদিন ধরে লালিত চেতনার ফল। উল্লেখ্য তিনটি দিনের অপেক্ষায় ছিল ৪ কোটি থেকে ৭ কোটি মানুষের ৮ থেকে ১৪ কোটি চোখ। তারা স্বার্থক হয়েছেন আলোকিত চোখগুলো দেখতে পেয়েছিলেন আলোকিত একটি সবুজ সতেজ মুধুর স্বরে পাখি ডাকা ভোর। দিন চলে যায় চলে যাচ্ছে চলে গেছেন ৪৭ থেকে ৭১ রের সেই বীর বাংলাদেশীরা।

আছি আমরা। ২১ ফেব্রুয়ারী আসলে আমরা গাড়ীর টায়ারের মত ফুলে ওঠি। ভাষার প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা তা ১ ফেব্র“য়ারী থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।

তবে কি বাকী দিনগুলো আসে না বা যায় না?

দিন যায় ঠিকই আসেও এবং তা ভালই। কিন্তু আমরা যারা মানুষ রূপের টায়ারা তারা ক্ষমতা আর নারীর লোভে পরে ভুলে যায় পিছনের সব প্রেরণা আর চেতনার কথা। আমাদের দেশের বেশির ভাগ লেখক সাহিত্যিক হয়ে গেছেন বইমেলা কেন্দ্রিক। সাথে প্রকাশকরাও। আমরা আজ প্রযুক্তির রঙ্গিন দুনিয়ায় বসবাস করছি। ফেসবুক টুইটার ইউটিউবের ব্যবহার আজ সহজ ও সুগম। তাই ঘরে বসেই নেয়া যায় সব খবর দেওয়াও যায়। প্রযুক্তির এই উন্নয়নকে সকলেই সাধুবাদ জানায় আমিও। কিন্তু আমরা কি দু চারদিনের জন্য তা ব্যবহার করি? ১৪ ফেব্র“য়ারী দেশের সব গণমাধ্যম, ফেসবুকসহ আমাদের বুকের ভিতর যে ভালোবাসার হিড়িক পড়েছে অন্যকোন দিনে তা পড়েনি। ঠিক তেমনই ২১ ফেব্রুয়ারীসহ ফেব্রুয়ারীর পুরো মাসে ভাষার প্রতি আমাদের ভালোবাসা উতলে ওঠে বেয়ে পড়ে।

একজন প্রেমিক যেমন তার প্রেমিকাকে ভালোবাসে আমৃত্য পাশাপাশি থাকতে চায়। মা যেমন তার সন্তাননের জন্য তার চুল পরিমাণ হায়াত আল্লাহর কাছে চায়। ঠিক তেমনই ভাষার প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকা দরকার প্রতিদিন প্রতিটি মুহুর্তূ জুড়ে। ফেসবুক টুইটর ইউটিউব ব্যবহারে কোন বাধা নাই। আমরা প্রযুক্তির সুব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাকে ছড়িয়ে দিতে পারি বিশ্বজুড়ে। নিজের ব্যক্তিগত পোস্টের পাশাপাশি প্রিয় লেখক সাহিত্যিকের বই এবং আলোচনা সমালোচনাও পোস্ট করতে পারি। নিজে এবং অন্য সকলে মিলে বই পড়ার জন্য অপুপ্রাণিত হতে পারি আজ থেকেই।

আমরা মাকে ছাড়া একমুহুর্তূ যেমন কল্পনা করতে পারি না। মায়ের পাশাপাশি মায়ের ভাষাকে নিয়ে আজ থেকে শুরু হোক বাংলা ভাষাচর্চার ব্যবহার এবং আজ থেকেই মায়ের মত মায়ের বুলিকে নিজের মত করে যতন করি এটাই হোক প্রতিটি বাংলাদেশীর শপথ।

হাসান সাইদুল, ঢাকা থেকে

 

|| আপডেট: ০৬:১২ অপরাহ্ন, ০৪ মার্চ ২০১৬, শুক্রবার

এমআরআর