শীর্ষ সংবাদ

মতলবে ভাতিজা হত্যার দায়ে জেঠাসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা আপন ভাতিজাকে হত্যার দায়ে চাচাসহ দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রোববার (৮ নভেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান এ আদেশ দেন। সে সঙ্গে আসামিদের নগদ আরও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জামাল হোসেন মতলব দক্ষিণ উপজেলার ঘোনা গ্রামের মুকবুল হোসেনের ছেলে এবং সজীব একই গ্রামের শহীদ উল্যাহর ছেলে। মামলার বাদী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামাল হোসেনের বড় ভাই মাসুদ রানা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ি থেকে সাত বছরের শিশু মো. মহিব পাশের ঘোনা স্কুল মাঠে খেলতে যায়। সন্ধ্যার পরও বাড়িতে আর ফিরে যায়নি সে। পরে তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ৪ ডিসেম্বর শিশুটির মা এবং অভিযুক্ত জামাল হোসেন থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে প্রবাসে থাকা শিশু মহিবের বাবা মাসুদ রানাকে তার স্ত্রী ঘটনাটি জানান। ৯ ডিসেম্বর দেশে ফিরে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মাসুদ রানা। পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথমেই সজীব হোসেনকে আটক করেন। পরে সজীব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে।

মামলার বিবরণে আরো উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন খেলার মাঠ থেকে মহিবকে ধরে নিয়ে চাচা জামাল ও সহযোগী সজীবসহ তার চায়ের দোকানে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বাড়ির সেপটিক ট্যাংকিতে লাশ গোপন করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ে মতলব দক্ষিণ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইব্রাহীম খলিল তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর সময়ে ২৫ জনের সাক্ষী গ্রহণ করেন এবং মামলার সব নথিপত্র পর্যালোচনা করে এই রায় দেন।

এই মামলায় সরকার পক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজিত কুমার রায় চৌধুরী ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোক্তার আহম্মেদ (অভি)। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন, শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া, মুরাদ হোসেন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলী।

এই মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন শিশু মহিবের বাবা মাসুদ রানা। তিনি বলেন, সামান্য জমিসংক্রান্ত বিরোধে আমার আপন ভাই এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাই সন্তানকে হত্যার দায়ে আপন ভাই এবং তার সহযোগীর ফাঁসির অপেক্ষায় আছেন মাসুদ রানা।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ৮ নভেম্বর ২০২০

Share