Home / শিক্ষাঙ্গন / `বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাশিক্ষার মধ্যে পার্থক্য নেই’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাশিক্ষার মধ্যে পার্থক্য নেই

`বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাশিক্ষার মধ্যে পার্থক্য নেই’

শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাশিক্ষার মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে। দুই জায়গায় মাতৃভাষার চর্চা সেভাবে নেই।

ইতিহাস পড়ানো হয় না। দেশীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক আচরণের শিক্ষা দেওয়া হয় না। এ কারণে এখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি হয়, আর বিচ্ছিন্নতা তো একটি রোগ। বিচ্ছিন্নতা থেকেই এই তরুণেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে, নয়তো জঙ্গি হয়।

বৃহস্পতিবার(৪ আগস্ট) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, শ্রেণি-পেশার কনভেনশনে সিরাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়ে পড়া তরুণেরা পুঁজিবাদ মানসিকতার। এরা ইহকালে পুঁজিবাদী।

আর এখন পরকালের জন্য পুঁজি সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তা ছাড়া বাঙালি পরিচয়ে এখন আর অনেকে গৌরব বোধ করছে না। এ কারণে তারা মুসলমান পরিচয়ে গৌরব বোধ করছে। এর ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে তরুণদের বের করে আনার উপায়ও বলেছেন। এক. তাদের মধ্যে জ্ঞানের চর্চা বাড়াতে হবে। এই জ্ঞান ইতিহাসচর্চার, নিজেকে জানার, কৃষ্টি-সাংস্কৃতিকে জানার। না-জানা মানুষ উদ্‌ভ্রান্ত হয়, তাদের সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়।

দুই. তরুণদের কাজ দিতে হবে। তবে এই কাজ জীবিকা নির্বাহের কাজ নয়। এই কাজ হতে হবে জীবনের জন্য। তিনি বলেন, ২৫ বছর ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয় না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কী করছে, কীভাবে সময় কাটাচ্ছে, সে খবর কেউ রাখছে না।

ছাত্রসংসদ এখন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতাদের দুর্নীতির হাতিয়ার। সেখানে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নেই। নাটক নেই, খেলাধুলা নেই। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত ছাত্রসংসদ থাকলে পরিবেশ বদলাবে। শিক্ষার্থীরা সৃষ্টিশীল হবে।

তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ারে হত্যা আর জঙ্গিদের হামলায় হত্যার মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখি না। রাষ্ট্রীয় বাহিনী একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে অপরাধী বলে ক্রসফায়ার করছে। কোনো বিচার করছে না।

আর জঙ্গিরা বলছে, তারা রায় দিয়েছে ওরা ততটা মুসলমান নয় বা অন্য ধর্মের, তাই হত্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ দেশের বাহিনীগুলো জঙ্গি দমনে ব্যর্থ হয়েছে। তারা একমাত্র বিনা বিচারে ক্রসফায়ারে হত্যায় দক্ষতা দেখিয়েছে। কেননা জঙ্গি হামলার পর বাহিনীগুলো বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান করছে, মেসে তল্লাশি করছে। দেখে মনে হচ্ছে কাজ করছে।

এমন কাজ তো গুলশানে হামলার আগে সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযানের মাধ্যমেও করেছিল। তাতে তো জঙ্গি হামলা বন্ধ হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার জঙ্গিদের মতো আচরণ করছে। তারা যা করছে, তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এখন এই প্রশ্ন তোলাটাই হবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন। জনগণকে এটাই করতে হবে।

কনভেনশন উপলক্ষে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার লিখিত বক্তব্যে ধর্মের নামে হত্যা, গুপ্তহত্যা, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ এবং রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

বাম মোর্চার সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে বক্তব্য দেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, সাপ্তাহিক সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।(প্রথম আলো)

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৬:১৯ পিএম,৪ আগষ্ট ২০১৬,বৃহস্পতিবার
এইউ

Leave a Reply