জবস

বেশ্যাজীবী সাইফুল আমিনের জন্য আমাকে জবাই করেন শাইখ সিরাজ

শাইখ সিরাজ ও সাগরের বিচার আল্লাহ করবেন: সালেহ বিপ্লবের মন্তব্যে তোলপাড়

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক | আপডেট: ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, ১৯ আগস্ট ২০১৫, বুধবার

চ্যানেল আইয়ের এক সময়ের পরিচিত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সালেহ বিপ্লব তার চ্যানেল আই থেকে চাকরি ছাড়ার কয়েক বছর পর এসে সরাসরি মুখ খুলেছেন। চাকরি চলে যাওয়ার ঘটনার পেছনের ঘটনা পর্যালোচনা করে তিনি বলেছেন, শাইখ সিরাজ ভাই, ফরিদুর রেজা সাগর ভাই আপনারা বড় বড় কথা বলেন; আল্লাহ আপনাদের বিচার করবেন।

সাংবাদিক সমাজের পরিচিত মুখ সালেহ বিপ্লব মঙ্গলবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ সম্পর্কিত এক বক্তব্য দেন। যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার লাইক ছাড়িয়ে যায়। অর্ধশত শেয়ার হয়েছে।

শুধু সংখ্যার বিচারে এই লাইক বা শেয়ারের বিবেচনার চেয়ে বড় কথা হল- বিষয়টি নিয়ে ঢাকার গোটা মিডিয়াতেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই কার্যালয়ে বিব্রতকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সহকর্মীরা নিজেদের ঘনিষ্ঠ ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে বুধবার সারাদিন এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে নিজেরা নিজেরা আলোচনার ঝড় তুলছেন।

বুধবার বিকেল পাঁচটায় এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত সালেহ বিপ্লব স্ট্যাটাসের কোনো পরিবর্তন না করায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

আলোচিত ওই স্ট্যাটাসে সালেহ বিপ্লব যা বলেছেন, “চ্যানেল আইর যখন তারেক রহমানকে দরকার হতো, বেজে উঠতো আমার ফোন। ফরিদুর রেজা সাগর ও শাইখ সিরাজ আমাকেই বলতেন, ম্যানেজ করো। আমিই সেই, যার ফোন তারেক রহমান প্রথম আওয়াজেই ধরতেন। একজন বেশ্যাজীবী সাইফুল আমিনের জন্য আমাকে জবাই করলেন শাইখ সিরাজ। ছিঃ। সাগর ভাই, সিরাজ ভাই! আপনারা কতো বড়ো বড়ো কথা বলেন, কতো সুন্দর আপনাদের চেহারা। আল্লাহ আপনাদের বিচার করবেন।”

সালেহ বিপ্লবের এই স্ট্যাটাসের পর কয়েকশ ফেসবুক ইউজার এতে মন্তব্য করেছেন। এদের প্রায় সবাই শাইখ সিরাজ ও ফরিদুর রেজা সাগরের নানা ধরনের সমালোচনা করেন। একজন লেখেন, বিএনপি আমলে এরা অর্থ তৈরি করে এখন সাধু সেজেছেন। অপর একজন লিখেছেন কেন এতোদিন চুপ ছিলেন। এর জবাবে সালেহ বিপ্লব লেখেন, ‘ভাতের কষ্ট বড়ো কষ্ট ভাই’।

অপর একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “চ্যানেল আই থেকে যেদিন প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহ আলমগীর চলে গেলেন, চলে গেলেন চীফ রিপেোর্টার সাইফুল আমিন। আমি, ইয়েস, আমি সালেহ্ বিপ্লব, সেই ৫ জনের একজন, যারা চ্যানেল আই নিউজকে বাচিয়েছিলো। সেই আমাকে কী করে চ্যানেল আই থেকে বের করে দিলেন শাইখ ভাই? সাগর ভাই? আপনাদের বিবেক কী বলে?”

এই স্টাটাসে বুধবার বিকেল চ্যানেল আইয়ের এক সময়ের আরেক পরিচিত মুখ রহমান মুস্তাফিজ চ্যানেল আইয়ের গত দশ বছরের বেশি সময়ের পালাবদলের কথা সংক্ষেপে লিখেছেন।

রহমান মুস্তাফিজ লিখেছেন, “সাইফুল আমিন ২০০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চ্যানেল আই ছাড়েন। ২০ ফেব্রুয়ারি আমি দ্বিতীয় বারের মতো যোগ দেই। শাহ আলমগীর ভাই একুশে টিভিতে রোমেল, রাশেদ আহমেদ, মাহবুব মতিন, নজরুল কবির, ফারহানা রহমান কে নিয়ে যান। মাহবুব মতিন পরে ফিরে আসেন। এটা ২০০৬ সালের শেষ দিকের কথা। এই টিম চলে যাওয়ার পর, নিউজ রুমের সিনিয়র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেই। এর আগে বাংলাভিশনে রুশদ ভাই, রিনভী, সাদী, শাকিলা জেসমিন, অ্যাবি আর আরেফীন ফয়সল যোগ দেন। শাকিলা ও ফয়সল পরে ফিরে আসেন। এই টিমের রিপ্লেসমেন্টও তখনও হয় নি। নিউজ রুম যখন অভিভাবক শুন্য, স্বেচ্ছ্বায় যখন টিম ধরে রাখার কাজ করছি, তখন সেই টিমের সিনিয়র সদস্য সন্তোষ মন্ডল ছুটি নিলেন। ফয়সল কাজে মন বসে না বলে এক কোনায় বসে বই পড়তেন। কাজ করতে ভালো লাগতো না সালেহ বিপ্লব আর মাহবুব মতিনের। তারিকুল ইসলাম মাসুম, শাকিলা জেসমিনসহ জুনিয়রদের নিয়ে তখন চালাতাম চ্যানেল আই সংবাদ। পরে সাইফুল আমিনকে চ্যানেল আই-তে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিলেন সন্তোষ মন্ডল, সালেহ বিপ্লব, মাহবুব মতিন, আরেফীন ফয়সল। সাইফুল আমিনকে ফিরিয়ে আনতে রাজি হতে আমাকে তারা বাধ্য করলেন। তারপর অনেক ইতিহাস। পরিবেশ তৈরি হল, পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম আমি। মারা গেল মাহবুব মতিন। টিকতে পারলেন না সন্তোষ মন্ডল, বিদায় নিতে হল সালেহ বিপ্লবকেও।”

তথ্যসূত্র : নিউজওয়ার্ল্ডবিডি ডট কম

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

Share