বৃষ্টি নেই, আমন চাষ নিয়ে বিপাকে ৩০ হাজার কৃষক

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে টানা তাপপ্রবাহে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বর্ষার মাঝামাঝিতেও বৃষ্টি নেই, জমি শুকিয়ে কাঠ। বৃষ্টির দেখা না মেলায় আমন ধানের চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার কৃষক। অনেকে সেচ যন্ত্রের সাহায্যে জমি তৈরি করছেন। তবে এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে তিনগুণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তরে এবার প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আষাঢ়ের মাঝামাঝি থেকে শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমনের চারা রোপণের সময়। চলতি মাসের প্রথম থেকে চারা রোপণ শুরু হয়। কিন্তু টানা তিন সপ্তাহ ধরে চলা তাপপ্রবাহের কারণে চারা রোপণের জন্য তৈরি করা আমনের জমিগুলো শুকিয়ে গেছে।

উপজেলাজুড়ে প্রায় ২৯০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ের শুরুতে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছিল। এ অবস্থায় আমনের চারা রোপণ করতে না পেরে সেগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম। ‘বেশি দামে কেনা’ ডিজেলে শ্যালোমেশিন দিয়ে ‘কোনোমতে’ সেচ দিয়ে সেগুলো টিকিয়ে রাখছেন, আর অপেক্ষা করছেন বৃষ্টির জন্য।

দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, চলতি মৌসুমে পানির অভাবে সঠিক সময়ে চারা রোপণ করতে না পারায় বীজতলাতেই তা বাড়ছে। এছাড়াও পানির জন্য আমনের বীজতলা লাল হয়ে যাচ্ছে। আমন আবাদ হয় বৃষ্টির পানিতে, এবার সেই বৃষ্টির দেখা নেই। আর প্রচণ্ড রোদে জমি পুড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগ থেকে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

গজরা ইউনিয়নের কৃষক সামেদ আলী বলেন, দুই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। শুরুতেই পানি সেচের যে টাকা খরচ হচ্ছে আবাদ শেষে লোকসানে পড়তে হবে। গত বছর আমার সব জমিতে আষাঢ় মাসেই আমনের চারা রোপণ শেষ হয়েছিল। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় রোপণ করতে পারছি না। পানির অভাবে বীজতলাও শুকিয়ে যাচ্ছে।

ওটারচর গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, জমিতে সেচ দেওয়ার পর নিমিষেই পানি হারিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হয়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। ধানের উৎপাদনও কম হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমি তৈরি করে চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আমন আবাদ নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ২ আগস্ট ২০২২

Share