Home / জাতীয় / রাজনীতি / ‘বিএনপি অবৈধ হলে আওয়ামী লীগও অবৈধ’

‘বিএনপি অবৈধ হলে আওয়ামী লীগও অবৈধ’

বিএনপিতে যতজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন, আওয়ামী লীগে অতজন আছেন কিনা সন্দেহ : ফখরুল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণে জাতি ‘হতাশ’ হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

সরকারের দুই বছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি অবৈধ হলে আওয়ামী লীগও অবৈধ। কারণ বাকশাল গঠনের পর আওয়ামী লীগ ছিল না। জিয়াউর রহমানের সময় বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নিয়েছিল, তখন আওয়ামী লীগও নিবন্ধন নেয়।’ দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, জাতির প্রত্যাশা ছিল— দেশে যে গভীর রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, ভাষণে তা নিরসনে একটি দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, প্রধানমন্ত্রী রুটিন বক্তব্য রেখেছেন। বিগত দুই বছর গণতন্ত্র নির্বাসিত ছিল। নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জাতিকে হতাশ করেছে।

এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান,  কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, শাহ নুরুল কবির শাহিন, ছাত্রদলের এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরে যখন বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু হলো, তখন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নিবন্ধিত হয়েছে। আওয়ামী লীগও নিবন্ধিত হয়েছে। তারা ওই সময়ে সব নির্বাচনে অংশ নেয়। তাই অবৈধতার ওইসব বক্তব্য অবান্তর। মূলত জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে  ফেরানোর জন্য এসব বলা হচ্ছে।’

মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকারি দল চিৎকার করে বলতে থাকে বিএনপির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কের কথা, এটা হাস্যকর। বিএনপি হচ্ছে, একটি রাজনৈতিক দল যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শহীদ  প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপিতে যতজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন, আওয়ামী লীগে অতজন আছেন কিনা সন্দেহ। মুক্তিযুদ্ধের  যে মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র, আজ সেই গণতন্ত্রকে সরকার নির্বাসিত করেছে। আমরা সেই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে যাচ্ছি।’ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের হিসাব মতে এই সময়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৪৪০ জন, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন ২৬৭ জন। গুরুতর আহত  ও পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন ৩৩৭। মামলা হয়েছে ২১ হাজার ৮৩। আসামি ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৭ জন। গ্রেফতার ও জেলহাজতে গেছেন ১৭ হাজার ৮৮৫। এর মূল লক্ষ্য গণতন্ত্রকে বিদায় করে তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ এবং সরকারের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করা। এটা করতে গিয়ে তারা একে একে গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে।’

গণমাধ্যম স্বাধীন নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী  জোর দিয়ে বলেছেন গণমাধ্যম এখন স্বাধীন। এই বক্তব্য  গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার সুপরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। মিডিয়া এই সময়ে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কিছুই বলতে পারছে না। ভিন্নমতের পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইটিভির মালিকানা  জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সহস্রাধিক সংবাদ কর্মী কর্মচ্যুত হয়েছেন। সারা দেশের অসংখ্য সংবাদ কর্মী সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপি- নেতা-কর্মীদের দ্বারা নিগৃত হয়েছেন। জাতীয়  প্রেসক্লাব  বেআইনিভাবে দখল করে নেওয়া হয়েছে। টকশোতে সরকারের কাজের সমালোচনা করা ব্যক্তিদের অংশ নিতে  দেওয়া হয় না। ভিন্নমত পোষণকারী লেখকদের ভীতি ও জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়।’ ড. মঈন খান বলেন, দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে নয়, দুর্নীতি আর লুটপাটের মহাসড়কে অবস্থান করছে।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০১:০৬ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার

এমআরআর