গলা ব্যথা নিয়ে দেড় বছরের শিশু সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী কুলসুমা আক্তার মুক্তা(২২) ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে তার অপারেশন করার জন্য অপারেশন থিয়েটারেও নিয়ে যায়, কিন্তু কুলসুমা আক্তারের আর জ্ঞান ফিরেনি। তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলেও সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার বিকেলে গলা ব্যাথা নিয়ে কুলসুমা লাইফ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ারপর চিকিৎসকরা মুক্তাকে অপারেশন সিদ্ধান্ত নেয়। নিয়ম অনুযায়ী রাত আনুমানিক ৮টায় দিকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ১ঘন্টা পর মুক্তার শ্বাশুড়ি আলেয়া বেগমকে জানানো হয়, তার পুত্রবুধূ অসুস্থ তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিকিৎসক রেফার করেছেন। তিনি উপায়ান্ত না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সে করেই চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের শ্বাশুড়ি আলেয়া বেগম জানান, আমার ছেলের স্ত্রীর গলায় টনসিল ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি ঐ এলাকার দালাল কামাল এর মাধ্যমে। তারা রাত আটটায় অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া পর ডাক্তার বলেছেন ১৫-২০ মিনিট সময় লাগবে ১ঘন্টা পর ৯টার দিকে আমাকে ডেকে বলেছেন আপনার ছেলের স্ত্রীর জ্ঞান ফিরছে না। তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পরে তড়িঘড়ি করে আমার নাতিকে দিয়েই চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসারা ইসিজি করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন জানান, সুস্থ সবল মানুষ লাইফ জেনারেল হাসপাতালে টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছে। রূপসা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সুমন জানান, মুক্তা আক্তারের মৃত্যুর খবর শুনে আমার কাছে কয়েকজন এসেছিল, আমি হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে বলেছে সে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছে। পরে এলাকার কয়েকজন লাশটি বাড়িতে নিয়ে এসেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে এনেস্থিসিয়া দেওয়া ডা. শাহ আলম রিপনকে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
লাইফ জেনারেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. পরেশ চন্দ্র পাল বলেন, হাসপাতালে রোগীর অজ্ঞান করার জন্য ডা. শাহ আলম রিপনকে নিয়ে আসা হয়। অজ্ঞান করার তিনটি ইনজেকশন এর মধ্যে দুটি করা হয়েছে। এই ইনজেকশন তার শরীরে সার্পোট করে নাই, তাই তার হার্ট ব্লক হয়ে গেছে। পরে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে হাসপাতালের এমডি ওই পরিবারের সাথে কথা বলেছেন।
কুলসুমা রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসা গ্রামের মেম্বার বাড়ীর প্রবাসী আল-আমিনের স্ত্রী।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪