ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে করোনার মধ্যেও নিস্তার নেই কিস্তির গ্রাহকদের

দেশের বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে প্রতি সপ্তাহ কিংবা প্রতিমাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ কিভাবে করবে এ নিয়ে চিন্তিত রয়েছে অল্প আয়ের মানুষেরা। করনোভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মানুষের চলাচল আগের থেকে অনেক কমে গেছে ফলে সাধারণ মানুষের আয় সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। । ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাংক, বেসরকারি এনজিও ও সমিতি থেকে নেয়া টাকার কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ঋণগ্রহীতারা।

কয়টি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নেয়া  কিস্তি পরিশোধ নিয়ে একাধিক ঋণ গ্রহীতার মধ্যে কেউ ক্ষুদ্র চায়ের দোকানদার, আবার কেউবা সিএনজি অটোরিক্সা চালক কিংবা দিনমজুর। তারা বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে এখন আর আগের মতো মানুষের চলাচল না থাকায় বেচাবিক্রি আগের মতো নেই। যানবাহনে কাংখিত যাত্রী পারাপার করা যাচ্ছে না। কিন্তু টাকা রোজগার হউক আর না হউক এমন এক দুঃসময়ে ঋণের কিস্তির টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিস্তির টাকার জন্য এনজিও এর প্রতিনিধিরা  যথাসময়ে টাকা না দিলে ও বাড়ি ছাড়ছে না। এমন এক নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে বিপাকে পরতে হচ্ছে সাদারণ ভুক্তভোগীদের।

ফরিদগঞ্জ বাজারে রতন বাবু নামে এক ব্যক্তি যার কাজ হলো জুতা সেলাই করে সংসার চালানো। তিনি বলেন একটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি, এই টাকার কিস্তি প্রতি সপ্তাহে ৮শ টাকা যোগাড় করতেই হয়। কিন্তু করোনার কারনে রাস্তায় মানুষের চলাচল কম থাকায় আমি আগের মত রোজগার করতে পারছি না।

দিনমজুর মাসুদ বলেন, এখন কেউ কাজের জন্য আগের মতো ডাকে না। কাজ না থাকলেও প্রতি সপ্তাহে আমার ঋণের কিস্তির টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো তা নিয়ে এখন দঃচিন্তায় আছি। তবে দেশের বর্তমান সময়ে কিস্তির টাকা আদায় স্থগিত রাখার দাবি তুলেছে ভুক্তভোগীরা।

অপরদিকে ফরিদগঞ্জে প্রথম শুরু হওয়া চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব সমিতির সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দীন শেখ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, শুধুমাত্র করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারনে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরাই কিস্তির টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে তাদেরকে সময় দেয়ার দাবিটি যৌক্তিক। তবে এ ক্ষেত্রে কোন সুযোগসন্ধানী কেউ যাতে আমাদের আমানতকারীর টাকা আত্বসাৎ করার সুযোগ না পায় সেই বিষয়টি আমাদের আমানতকারীদের স্বার্থেই ঋণগ্রহীতাদের মাথায় রাখতে হবে।

ফরিদগঞ্জের গ্রামীন ব্যাংকের ম্যানেজার আল আমিম মাসুদ বলেন, দেশের বর্তমান দুঃ সময়ে অল্প আয়ের মানুষের ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা উপরের কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে উক্ত দাবিটি যৌক্তিক বলে তিনিও একমত পোষন করেছেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, করোনাভাইস পরিস্থিতির কারনে দেশে এখন মূলত দুঃসময় বিরাজ করছে। অল্প আয়ের মানুষের ঋণ নেয়া কিস্তির টাকা আদায় দেশের এই দুঃসময়ে স্থগিত রাখার এই যৌক্তিক দাবির পক্ষে আমিও একমত। তারপরও কেউ যেন অল্প আয়ের মানুষের কাছ থেকে চলমান এই দুঃসময়ে কিস্তির টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে কোন বাড়াবাড়ি না করে সে বিষয়ে আমি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ থাকবে।

প্রতিবেদক : শিমুল হাছান, ২১ মার্চ ২০২০

Share