ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে ৩০ লাখ টাকার সেতু আছে রাস্তা নেই

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর ইউনিয়নের নলডগী গ্রামে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও সেতুর দু’পাশে নেই কোনো রাস্তা।

২০১৬ সালের জুন মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ঘটনাস্থলে যেয়ে নলডগী গ্রামে ও সেতু সংলগ্ন বাসিন্দাদের সাথে আলাপকরে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ থেকে প্রস্তাবের মাধ্যমেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটির একপাশে বাড়িতে যাওয়ার জন্য সরু রাস্তা এবং অপর পাশে ফসলি জমি। কে বা কারা এ সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা তা’ জানেন না।

স্থানীয় শাহনুর গাজী বলেন, লেদি খালের ওপর যে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এর জন্যে গ্রামবাসী কোনো প্রস্তাব কিংবা আবেদন করেননি।

বরং এ সেতু নির্মাণের কারণে তাদের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ফসল নষ্ট করা হয়েছে। প্রায় ১ বছর হলেও এখন পর্যন্ত সেতুর দু’পাশে কোনো রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেই। এতে সরকারের ৩০ লাখ টাকা ব্যয় হয়।

একই এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন সরদার বলেন, এলাকার মানুষের চলাচলের জন্যে পূর্ব থেকেই ক’ দিক দিয়ে রাস্তা আছে। কী কারণে খালের ওপর সেতু নির্মাণ হয়েছে আমাদের জানা নেই। আমাদের ফসলি জমির ওপর দিয়ে কোনো ভাবেই রাস্তা তৈরি করতে দেয়া হবে না।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর সেতু নির্মাণের জন্যে আবেদন পাঠানো হয়।

সে আলোকে অধিদপ্তর ২০১৬ সালের ৪ মার্চ সেতু নির্মাণের জন্যে একটি জাতীয় দৈনিকে দরপত্র আহবান করে।

দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে একই সালে ১৭ এপ্রিল মেসার্স ইমন ট্রেডার্সকে ৪৪ দিনের মধ্যে সেতু নির্মাণ করার জন্যে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ইমন ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. জহির আলম নির্দিষ্ট সময়ের ক’দিন বেশি সময় নিয়ে সেতুটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব বলেন, ‘ভবিষ্যতে এলাকাবাসী চলাচলের জন্যে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর চাইতে বেশি কিছু আমি জানি না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘এ উপজেলায় যোগদানের পূর্বে সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। রাস্তা ছাড়া কেন সেতু নির্মাণ হয়েছে তিনি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিবেন। তিনি আসার পূর্বে উপজেলা প্রকল্পের অনেক কাজ কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে ছিলো না। এখন বাস্তবে প্রকল্পগুলোর কাজ শতভাগ করার চেষ্টা চলছে।’

ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার বলেন, ‘তিনিও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য। সেতুটি করার জন্য উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান রানা প্রস্তাব করেছেন।’

চাঁদপুর জেলা ত্রাণ র্কমকর্তা মো. নাছির উদ্দিন জানান, ‘জেলা পর্যায় থেকে শুধুমাত্র টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের বাকী কাজ উপজেলা পর্যায় থেকে করা হয়।’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪: ৩০ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share