Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জের শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজে জমজমাট পিঠা উৎসব
স্কুল

ফরিদগঞ্জের শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজে জমজমাট পিঠা উৎসব

পিঠা বাংলাদেশের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের একটি ধারক। তবে নগরায়ণের প্রভাবে পিঠা ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে। নগর সংস্কৃতির প্রভাবে হারিয়ে যাওয়া পিঠা নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে পৌষের শেষ দিকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৫ ( জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় পিঠা উৎসবের সূচনা হয়। দিনব্যাপী চলে এই উৎসব

এ উপলক্ষে স্কুল আঙ্গিনা জুড়ে শীতের পিঠার মিষ্টি গন্ধে ভরপুর ছিল। আর এ গন্ধে মুখর হয়ে শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-শিক্ষক যোগ দিয়েছিলেন পিঠা খাওয়ার উৎসবে।

পৌষ-মাঘের হাত ধরে, পিঠা উৎসব এলো ফিরে এ স্লোগানে ফরিদগঞ্জের শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ উৎসবে অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করা প্রায় শতাধিক পদের পিঠা প্রদর্শন ও বিক্রি করা হয়।

দারুণ এ আয়োজন দেখতে ও পিঠার স্বাদ নিতে শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজ ছিল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণা। বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা মানুষজন হৃদয় হরণ, মাছ পিঠা, ফুলি পিঠা, নারিকেল পিঠা ও পাটি সাপটাসহ নানান ধরণের পিঠার স্বাদ নিয়েছেন।

ফুলে সজ্জিত ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছিরুল ইসলাম চৌধুরী জুয়েল। এ সময় অধ্যক্ষ মো. আরিফুর রহমান, দাতা সদস্য আবু হাসনাত নয়ন পাটওয়ারী, শফিউল আযম শুকু পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা পিঠার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।

নিজ হাতে বানানো শতাধিক পিঠার পসরা সাজিয়ে ১৬ স্টল নিয়ে বসেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

পিঠা উৎসব ঘুরে আদি বাংলা পিঠা ঘর, গ্রাম বাংলার পিঠা ঘর, লাল সবুজের বাংলা পিঠা ঘরসহ বিভিন্ন নামে ১৬ টি দোকান দেখা যায়।

এতে ডাল পাকন, শুকনা পিঠা, লতা পিঠা, শামুক পিঠা, সাকুর পিঠা, সেমাই পিঠা , পাটি সাপটা, পান্তুয়া, জেলি কেক, বরফি, দুধ চিতল, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, ঝুনঝুনি পিঠা, মুগ পাকন, ক্ষীর পাটি সাপটা, লবঙ্গ ও নারিকেল বেলি পিঠাসহ শতাধিক পিঠা দেখা গেছে। একেকটির স্বাদ একেক রকম। একেকটি দোকানে প্রায় ৩০ ধরণের পিঠা থাকলেও অনেকেই এসব পিঠার সাথে অপরিচিত।
পিঠা উৎসব দেখতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ পৌষ মাসে পিঠা উৎসব হয়ে থাকে। তবে শীত মানেই বাড়িতে বাড়িতে পিঠা উৎসব। যদিও এখন আর গ্রাম ছাড়া শহরে পিঠা দেখা যায় না। খাওয়াতো অনেক দূরে, অনেক পিঠার নামও এখন মনে পড়ে না। এখন শহরের মানুষের একমাত্র ভরসা রাস্তার পাশে বানানো চিতই আর ভাপা পিঠা। মফস্বল শহরেও একই অবস্থা। শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের আয়োজিত পিঠা উৎসব প্রশংসনীয়।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. আরিফুর রহমান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শীতকালে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছি। সবগুলো পিঠা অভিভাবকদের সহযোগীতায় শিক্ষার্থীরা বানিয়েছে। এবার প্রতিটি স্টলেই নতুন নতুন ধরণের পিঠা দেখছি। আয়োজনটি শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে উপভোগ করছে।

শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি নাছিরুল ইসলাম চৌধুরী জুয়েল বলেন, পিঠা উৎসব অসাধারণ একটি আয়োজন ছিল। আমি প্রত্যেকটি স্টল ঘুরে দেখেছি। সত্যিই আমি অভিভূত। স্টলগুলোতে এতো পিঠা উঠেছে, এরমধ্যে অনেক পিঠার নাম আমি নিজেও জানি না। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধারণে এ আয়োজন প্রশংসনীয়। এ উৎসবটি পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেদক:শিমুল হাছান,২৫ জানুয়ারি ২০২৪