চাঁদপুর শহরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনেই খোলা পরিবেশে সড়কের ওপর ময়লা আর্বজনা ফেলা হচ্ছে প্রতিদিন। পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্ব বা কর্তব্য থাকলেও তা যেনো নজরে পড়ছে না কর্তৃপক্ষের। বরং পরিবশে অধিদপ্তরের সামনেই পরিবেশের বিপর্যয়।
প্রতিদিনি শহরের প্রধান সড়কের পাশে এমন ময়লা আর্বজনার দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হলেও সেই পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষার কার এমন প্রশ্নই থেকে যায় সচেতন মহলের।
দীর্ঘ দিন ধরে লক্ষ্য করা গেছে চাঁদপুর শহরের সৌন্দয্যমন্ডিত স্থানগুলো একটি ইলিশ চত্বর। আর সেটি সংলগ্ন স্টেডিয়াম গেটের পশ্চিম পাশে প্রধান সড়কের ওপর ময়লা আর্বজনা ফেলছেন স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়ির লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা।
যার অল্প কয়েক গজ দুরেই রয়েছে চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়। শহরের এমন গুরত্বপূর্নস্থানে খোলা পরিবেশে সড়কের পাশে ময়লা আর্বজনার ফেলার স্বচিত্র সংবাদ বেশ কয়েকবার স্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রকশিত হলেও তার কোন স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেউই। এমন কি পরিবেশ অধিদপ্তরের চোখের সামনেই এমন দৃশ্যে যেনো তাদেরও দৃষ্টি গোছর হচ্ছেনা পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি।
শুধু তাই ই নয়, গত কয়েক বছর ধরে দেখা গেছে চাঁদপুর শহর জুড়ে যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনার স্তপ ফেলে রাখা হচ্ছে। বিগত মাস গুলোতে শহরে বের হলেই প্রধান সড়ক হতে শুরু করে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রাস্তা ঘাটে ময়লা আর্বজনার স্তুপ চোখে পড়ছে। শহরে বের হলেই চোখে পড়ে সচেতনহীনতার নানান দৃৃশ্য। দেখা যায় সড়কের পাশে ডাস্টবিন থাকা সত্বেও বিভিন্ন বাসা-বাড়ির মানুষজন এবং ব্যবসায়ীরা নিদিষ্টস্থানে ময়লা-আর্বজনা না ফেলে সড়কের ওপর তা ফেলে রাখছেন।
বিশেষ করে শহরের স্টেডিয়াম রোড, নতুন বাজার সিএসডি গোডাউনের সামনে ট্রাক রোড, বিপনীবাগ, মরহুম আঃ করিম পাটওয়ারী সড়ক, স্ট্যান্ট রোড, নাজির পাড়া, পাল পাড়া, প্রপেসর পাড়া, মিশন রোড, গুয়াখোলা, ও পুরাণ বাজার ব্রীজের নিচে পৌর ঈদ গাঁ সংলগ্ন স্ট্যান্ড রোডে বিশাল জায়গা জুড়ে ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখতে দেখা যায়।
সরজমিনে দেখা গেছে চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ঈদ গাঁ সংলগ্ন ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য বিশাল একটি ডাস্টবিন নির্মান করেছেন। কিন্তু স্থানীয় বাসা-বাড়ির লোকজন এবং বিভিন্ন কাঁচামাল আড়ৎধারী ও ফল ব্যবসায়ীরা পৌরসভার নির্মিত ওই নিদিষ্ট ডাস্টবিনে ময়লা না ফেলে ব্রীজের নিচের অংশে সড়কের অর্ধেক জুড়ে ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখছেন।
খোলা জায়গায় রাস্তার ওপর এভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখার কারণে যেমন চাঁদপুর শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এসব ময়লা আবর্জনা খোলাস্থানে ফেলে রাখার কারণে দুর্গন্ধে নাকে হাত রেখে যাতায়াত করছেন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।
এছাড়া চাঁদপুর ছায়াবাণী মোড়ে ৪টি সড়কের সংযোগস্থলের ঠিক পাশেই বিশালাকৃতির ডাস্টবিন যার উল্টোদিকে রয়েছে মাতৃপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রেস্টুরেন্ট। এ ডাস্টবিনের চরমু দুর্গন্ধে সেখা দাঁড়িয়ে থাকায় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদনের পরেও টনক নড়েনি পৌরসভা সংশ্লিষ্টদের। আরো পড়ুন- চাঁদপুরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ডাস্টবিন : হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
গত কয়েক বছরে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ সারা জেলা ব্র্যান্ডিং জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আর এই ব্র্যান্ডিং জেলার সার্বিক উন্নয়নে জেলা প্রশাসন ‘ক্লীন চাঁদপুর গ্রীন চাঁদপুর’ করতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন চাঁদপুর পৌরসভাকে নতুন রূপে গড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। যার ফল স্বরূপ হিসেবে চাঁদপুরকে ক্লিন ও গ্রীন রাখতে ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্যে শহরের বিভিন্নস্থানে মিনি ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন।
এসব অস্থায়ী ডাস্টবিন থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আবর্জনা নিয়ে ফেলার কথা রিসাইক্লিং সেন্টারে। অথচ জনসচেতনতার অভাবে শহরবাসী জেলা প্রশাসনের দেয়া ওই ডাস্টবিনে ময়লা আর্বজনা না ফেলে রাস্তার পাশে ময়লা আর্বজনা ফেলছেন।
গণসচেতনতার অভাবে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা জমিয়ে রাখা হয় রাস্তার পাশে। এতে পথচারীর চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ এইচ এম রাশেদ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, বিষয়টি আমাদের নয়। তাই আমাদের কিছুই করনীয় নেই। এটি যেহেতু চাঁদপুর পৌরসভার বিষয় সেক্ষেত্রে পরিবেশ ও শহরের সৌন্দর্য রক্ষার্থে এটিকে স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য তা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা এ বিয়য়ে চাঁদপুর পৌরসভাকেন অবগত এবং অনুরোধ করবো।
এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদন : বাসস্ট্যান্ট ইলিশ চত্বরে ডাস্টবিনের স্থায়ী সমাধান হবে কি?
প্রতিবেদক : কবির হোসেন মিজি, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur