Home / খেলাধুলা / ফরিদগঞ্জের শামীমসহ নিষিদ্ধ বাংলাদেশ-ভারতের ৫ ক্রিকেটার
নিষিদ্ধ

ফরিদগঞ্জের শামীমসহ নিষিদ্ধ বাংলাদেশ-ভারতের ৫ ক্রিকেটার

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে অশোভন আচরণের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের পাঁচ ক্রিকেটারকে শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। সেদিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে আইসিসি উভয় দলের পাঁচ খেলোয়াড়কে কয়েকটি ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে।এদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি ও দুজন ভারতীয়।

চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের শামীম হোসেন ৮ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন।ক্রিকেটাররা অনূর্ধ্ব-১৯ বা ‘এ’ দলের হয়ে সামনের ওয়ানডে অথবা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করবেন।

shamim-and-joy

ফরিদগঞ্জের সন্তান ট্রফি হাতে শামীম হোসেন এবং মাহমুদুল হাসান জয়।

শাস্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তিন ক্রিকেটার হলেন- তৌহিদ হৃদয় (১০ ম্যাচ নিষিদ্ধ), শামীম হোসেন (৮ ম্যাচ নিষিদ্ধ) এবং রকিবুল হাসান (৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ)। ভারতের দুই ক্রিকেটারের মধ্যে আকাশ সিং নিষিদ্ধ হয়েছেন ৬ ম্যাচ আর লেগস্পিনার রবি বিষ্ণুইকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৫ ম্যাচ।

আরো পড়ুন:

ফরিদগঞ্জে দু’কৃতি সন্তানের বিশ্বকাপ সাফল্যে আনন্দে ক্রীড়াপ্রেমিরা

 

আইসিসি জানিয়েছে, ফাইনাল ম্যাচ শেষে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক এবং ধাক্কাধাক্কি করে এসব খেলোয়াড় ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।

ফাইনালের ম্যাচ রেফারি গ্রায়েম ল্যাবরয় জানান, বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার ও ভারতের দুই খেলোয়াড় আইসিসির বিধিবিধানের ২.২১ ধারা ভঙ্গ করেছেন।

তৌহিদ হৃদয়ের বিরুদ্ধে আইসিসির ২.২১ বিধিবিধান ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ডিমেরিট পয়েন্ট ৬। শামীম হোসেনও ২.২১ বিধিবিধান ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তার নামের পাশে যোগ হয়েছে ৬টি ডিমেরিট পয়েন্ট। শামীমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৮টি ম্যাচে। রকিবুল হাসান নামের পাশে যোগ হয়েছে ৫টি ডিমেরিট পয়েন্ট।

ভারতের আকাশ সিংয়ের বিরুদ্ধেও ২.২১ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত। তার ডিমেরিট পয়েন্ট ৬। রবি বিষ্ণুইয়ের ডিমেরিট পয়েন্ট ৭।

কী হয়েছিল ফাইনালে

বাংলাদেশ ও ভারতের যুবদের মধ্যকার জমজমাট ফাইনাল ম্যাচের উত্তাপ দেখা গেছে একদম শুরু থেকেই। তবে সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ম্যাচ শেষে শিরোপা উদযাপনের সময়। বাংলাদেশ দল যখন পতাকা হাতে উদ্দাম উদযাপনে ব্যস্ত, তখন হুট করেই দেখা গেল একটা জটলার মধ্যে প্রায় হাতাহাতির অবস্থা দুই দেশের খেলোয়াড়দের।

কোচিং স্টাফদের মধ্যস্থতায় থামে সে দফার ঝগড়া। এর খানিক পরই দেখা যায়, বাংলাদেশের পতাকা টানছেন ভারতের জার্সি পরা এক খেলোয়াড়। মূলত উদযাপনরত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পতাকা ছিনিয়ে নেয়াই ছিল উদ্দেশ্য। সে ঘটনা টিভি স্ক্রিনে ধরা পড়তেই সরিয়ে নেয়া হয় ক্যামেরা। তবে তখন যে ঘটেছিল আপত্তিকর কিছু- সে বিষয়ে আর সন্দেহ থাকে না কারওরই।

কিন্তু তখন আসলে ঠিক কী ঘটেছে, তা বলতে পারেননি বাংলাদেশ বা ভারতের অধিনায়ক। এমনকি ভারতীয় দলের টিম ম্যানেজার অনিল প্যাটেলও জানিয়েছেন যে, তারা তখনকার ঘটনা কিছুই দেখেননি। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলি বলেন, ‘আমি জানি না ঠিক কী হয়েছে তখন। আমি জিজ্ঞেসও করিনি সেখান কী হচ্ছে।’

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে একই কথা বলেন ভারতের টিম ম্যানেজার প্যাটেলও। তার ভাষ্যে, ‘আমরা ঠিক জানি না তখন কী হয়েছে। সবাই বিস্মিত ছিলাম। কারণ আমাদের কারওরই জানা ছিল না সেখানে কী হচ্ছে বা হয়েছে।’

এদিকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এক দৈনিকে নির্বাচক কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ দলের সাবেক ফাস্ট বোলার হাসিবুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, পুরো ঘটনায় দায় ছিল ভারতের খেলোয়াড়দেরই। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেছে ভারতের ক্রিকেটাররা।

তিনি বলেন, ‘ওরা পুরো ম্যাচজুড়েই প্রচুর স্লেজিং করেছে। আমরা জেতার পর তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আমাদের ক্রিকেটাররা যখন উৎসব করতে শুরু করল, তখনই ওরা এসে মা-বাপ তুলে গালিগালাজ শুরু করে। কত আর সহ্য করা যায়! ছেলেরা সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করতে যায়। এতেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি।’

এদিকে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৩ উইকেট হারানোর পর বাঁধনহারা উদযাপনে মত্ত হয় বাংলাদেশের যুবারা। যার একপর্যায়ে ছিল দলগতভাবে মাঠ প্রদক্ষিণ তথা ভিক্টোরি ল্যাপ পর্ব। তখন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা দেখতে পান মাঠের সীমানা দড়ির ভেতরে অনেক বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। যেগুলো গ্যালারি থেকে ছুড়েছেন দর্শকরা। ভিক্টোরি ল্যাপ দেয়ার সময় এ পড়ে থাকা বোতলগুলো কুড়িয়ে সীমানার ওপারে ফেলে দেন যুবা টাইগাররা।

চাঁদপুর টাইমস রিপোট,১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০