চাঁদপুর

ধর্ম মেনে ছেলে-মেয়েদের গড়ে তুলতে হবে : চাঁদপুর জেলা প্রশাসক

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেছেন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে চাঁদপুর ব্যাপক কাজ শুরু করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে গনসচেনতা সৃষ্টি করতে পারলে এমনিতে বাল্যবিবাহ আর হবে না। বর্তমানে যৌতুকের কারণে নির্যাতন কমে গেছে। আর যে টুকু নির্যাতন হয়, তা মানসিক বৈসম্যের কারণে হচ্ছে। আমাদের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে। সকলের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। যাতে করে ১৮ বছরের নিচে কোন মেয়ের বিয়ে না দেয়। ধর্মকে মেনে ছেলে মেয়েদের গড়ে তুলতে হবে।’

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে মেয়েদের নিরাপদ নাগরিকত্ব প্রকল্প (মেজনিন) সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন যৌন হয়রানি ও বাল্যবিয়ে নির্মূলকরণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্র্যাকের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের যে এলাকায় বাল্যবিবাহ হয় সে এলাকার ইউপি মেম্বারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করা হবে । কনে এবং বরের পিতা-মাতারাও আসামী হবেন। বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে চরাঞ্চলগুলোতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে এবং বেশি করে কাজ করতে হবে। আগামী জুনের পর চাঁদপুর জেলায় বাল্য বিবাহ দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। শতভাগ বাল্যবিবাহ মুক্ত করার চেষ্টা করবো । যৌন হয়রানি ও বাল্য বিবাহ থেকে আমাদের পরিত্রান পেতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ছেলে মেয়েদের ডাটা ব্যাজ তৈরি করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, চাঁদপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সফিউদ্দিন।
ব্র্যাকের সিনিয়র জেলা ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ব্র্যাকের প্রতিনিধি ফারুক আহম্মেদ। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি, ব্র্যাক এর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক প্রসন্ত কুমার দে।

উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম হান্নান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, , চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. মনিরা চৌধুরী, হাইমচর উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. সফিকুল ইসলাম, মাতৃপীঠ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা, খেরুদিয়া দেলোয়ার হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ মেজবা উদ্দিন ভূঁইয়া, প্রথম আলোর চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, ডিবিসি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি তালহা জুবায়ের প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুল হাই, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম সাইফুল হক, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাক হায়দার , জেলা রেজিষ্টার মো. মুসতাক আহম্মেদ, চাঁদপুর, এনডিসি কাজী মো. মোহসীন উজ্বল, সহকারি কমিশনার, চাঁদপুর, জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সহকারি পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান প্রমুখ।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জনাব শামসুন্নাহার বলেন, যৌন হয়রানি ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে পুলিশের পক্ষ থেকে সব সময় সকল ধরণের সহযোগীতা অক্ষুন্ন থাকবে। তিনি সমস্যা প্রতিরোধে তার পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগিতার আহ্বান জানান এবং নৈতিক শিক্ষার উপর মানুষ গড়ার কারিগরদের আহ্বান জানান ।

তিনি আরো বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে যৌন হয়রানি অনেকটাই কমে এসেছে। যৌন হয়রানি, সাইবার বুলিং ও বাল্যবিয়ে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই। এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দরকার। সেইসাথে শারীরিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

করেসপন্ডেন্ট ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৯ :২৮ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলাবার
এইউ

Share