চাঁদপুর সদর

‘দেড়লাখ টাকায়’ মৈশাদীতে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা

চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকার থাই এ্যালমুনিয়ামের ব্যবসায়ী রানার অসামাজিক কার্যকালাপের সময় যুবকদের কাছে হাতে নাতে ধরার পড়ার বিষযটি ধামা চাপা দেয়ার দেড়লাখ টাকা নিয়ে মৈশাদী এলাকায় চ্যাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১২ জুলাই চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কসাই আলমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পরে রোববার (১৬ জুলাই) দুপুরে ওই ইউনিয়নের প্রত্যেক ওয়ার্ডের মেম্বার মিলে অসামাজিক কার্যকালাপের সাথে জড়িত থাকায় কসাই আলমের বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেয় বলে এলাকাবাসী জানায়। ঘটনার কথা এলাকায় জানাজানি হলে এলাবাসির মাঝে এ নিয়ে অনেক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।

ঘটনার পরেরদিন কসাই আলমের স্ত্রী রিনা বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘১২ জুলাই বিকেলে চেয়ারম্যান ঘাটা এলাকার থাই ব্যবসায়ী রানা একজন মধ্য বয়স্ক নারী এবং ১২ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে জমি ক্রয় করার নাম করে তাদের বাড়িতে যান। কিছুক্ষণ পর তারা ঘরে অবস্থান করেন এবং ওই নারী তার বোন ও স্কুলছাত্রী তার মেয়ে বলে পরিচয় দেন।

এরইমধ্যে রিনা বেগম মোবাইল কথা বলতে বলতে বাহিরে বের হলে রানা তাদের ঘরের ভেতরের রুমে প্রবেশ করে ১২ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রীর সাথে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। বিষয়টি টের পেয়ে ক’জন যুবক বাহিরে থেকে ঘরে প্রবেশ করে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতে নাতে ধরে ফেলে এবং মোবাইলে ছবি ধারণ করে। ওই ছবিগুলো ফেসবুক ও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে প্রথমে রানার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন।

এদিকে এমন দৃশ্য দেখে কসাই আলমের স্ত্রী রিনা বেগম স্থানীয় মেম্বারকে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং স্থানীয় এলাকার থাইয়ের ঠিকাদার কানা আলম নামে এক ব্যাক্তি ব্যবসায়ী রানার পক্ষ হয়ে দেড় লাখ টাকায় তা ধামা চাপা দেয়া হয় বলে রিনা বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানায়। ওই টাকা ক’জন যুবকসহ বিভিন্নজন ভাগ করে নেয়।

ওই এলাকার ওছমান গাজী, সবুজ খানসহ একাধিক ব্যাক্তি জানায়, কসাই আলম এবং তার স্ত্রী রিনা বেগম বিভিন্ন লোক বাড়িতে এনে অসামাজিক কর্মকান্ড করার সুযোগ দেন। এর বিনিময়ে তারা তাদের কাছে বিভিন্ন অংকের টাকা গ্রহণ করে। এছাড়াও তারা চুরি এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিকবার কসাই আলম জেলহাজতে থাকতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৈশাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিক পাটওয়ারী চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘যে বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তারা পূর্ব থেকেই খারাপ বলে শুনে আসছি। ওইদিনকার ঘটনার কথা আমি পরে শুনেছি। দেড়লাখ টাকায় তা মিট হয়েছে তা শুনেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগামীতে যাতে এমন কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমরা সকলে একাত্মতা পোষণ করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বসে আলাপ আলোচনা করবো।’

কসাই আলমের বাড়িতে তালা লাগানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের জন্য এমন ঘটনায় এলাকার বদনাম রটানোর কারনে ইউনিয়নের সকল মেম্বাররা মিলে তাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত থাই ব্যবসায়ী রানা মুঠোফোনে চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘ঘটনার বিষয়টি তো ওইদিন রাতেই মিট হয়ে গেছে। এটা চেযারম্যান মানিক ভাই জানেন এবং সরকারদলীয় নেতার শালা রাজীব জানেন। আপনি তাদের সাথে কথা বলেন। এটাতো আমার পার্সোনাল বিষয়।’

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২: ১০ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Share