Home / সারাদেশ / দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যার পদধ্বনি : সতর্ক প্রশাসন
Padma river
পদ্মা নদী

দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যার পদধ্বনি : সতর্ক প্রশাসন

দেশের ১৫টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব জেলার ওপর দিয়ে বহমান নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলায় বসবাসকারী মানুষের ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের ।

দেশে করোনা মহামারির পাশাপাশি ধেয়ে আসছে বন্যা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্কাবস্থায় রয়েছে বন্যাকবলিত জেলা প্রশাসন। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে।

পাঠানো হয়েছে শুকনো খাবারসহ শিশুখাদ্য। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বিভিন্ন খামারে গড়ে ওঠা গবাদিপশুর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখাসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মুহূর্তে দেশের ১৫টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে।

এসব জেলার ওপর দিয়ে বহমান নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলায় বসবাসকারী মানুষের ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের।

জেলাগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের ১১টি নদীর পানি ১৫টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দেশের উত্তর-পূর্বাংশের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা বন্যার পানিতে পস্নাবিত হয়েছে।

পয়েন্টগুলো হচ্ছে ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্ট,ঘাগট নদীর গাইবান্ধা পয়েন্ট, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া ও চিলমারী পয়েন্ট, যমুনা নদীর ফুলছড়ি,বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ পয়েন্ট, আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্ট, ধলেশ্বরীর এলাসিন, পদ্মার গোয়ালন্দ, সুরমার কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্ট এবং পুরনো সুরমার দিরাই এলাকা।

বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে রাখতে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বন্যা পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে কন্ট্রোল রুম চালুর বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ জানান, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, এখন যে পরিস্থিতি আছে, তা আগামি ৪-৫ দিন প্রায় একই রকম থাকবে। এরপর আবার বৃষ্টি শুরু হলে পানি বাড়তে পারে। এতে দেশের উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাংশের যেসব এলাকা এখন পস্নাবিত, সেখানে পানির উচ্চতা বাড়বে এবং নতুন নতুন এলাকা পস্নাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, তবে আগামী সপ্তাহে নতুন এলাকা আবার পস্নাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর আরিচা এবং ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর ভাগ্যকুল পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকরাও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

তিনি বলেন, ‘একদিকে করোনার ছোবল, অন্যদিকে বন্যা। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি। গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের বন্যাদুর্গত মানুষরা। বন্যাকবলিত জেলাসমূহের অভিমুখে প্রধানমন্ত্রীর উপহার নিয়ে দ্রম্নতগতিতে ছুটছে ত্রাণবাহী ট্রাক।

ডা.এনাম বলেন, ‘বন্যার্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশেই আমরা সবাই মাঠে আছি। বন্যার্তদের ভয়ের কিছু নেই। এদিকে প্রতিদিনই বন্যাকবলিত জেলাগুলোর জন্য সরকারের ত্রাণ সহায়তা বাবদ চাল, গম ছাড় করা হচ্ছে। ছাড় করা হচ্ছে নগদ টাকা, শুকনা খাবার ও শিশুখাদ্য। ’

কন্ট্রোল রুমের নম্বর হচ্ছে ০১৩১৮-২৩৪৫৬০।

বার্তা কক্ষ , ৭ জুলাই ২০২০