Home / সারাদেশ / ছাত্রছাত্রীদের হাতে লাঞ্ছিত প্রভাষক
ছাত্রছাত্রীদের হাতে লাঞ্ছিত প্রভাষক

ছাত্রছাত্রীদের হাতে লাঞ্ছিত প্রভাষক

মানুষ গড়ার কারিগর যাদের বলা হয় তাঁরাই হলেন শিক্ষক। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে মূল কারিগরের স্বীকৃতি পাবেন আমাদের প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকরা। তারপর পর্যায়ক্রমে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে হবে।

এমন ঘটনা কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজে অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি ও সেশন ফি নিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়।

গত (১২ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা ২৫ মিনিটের দিকে দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ও ছাত্রীরা টেষ্ট পরীক্ষা দিতে আসে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা একটু পরে কিন্তু এসময়ে পরীক্ষার ফি ও সেশন ফি নিয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এইচএসসি টেস্ট পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে ৩০০ টাকা ও সেশন ফি নির্ধারণ করে ৫০০ টাকা এবং প্রতি মাসের বেতন ৮০ নির্ধারণ করে।

ওই কলেজের ছাত্র ও ছাত্রীরা বলছে, আমরা টাকা দিবো এক শর্তে, ক্লাস ওয়ান থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে আসছি, কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক ছাত্র ও ছাত্রী চলে গেছে কিন্তু কলেজের কোনো চেহারা পরির্বতন হয়নি। এত টাকা ওঠে কিন্তু টাকাগুলো কোথায় যায়। আমরা গরিব, তাই বলে লেখাপড়া করতে পারবো না। এই অঞ্চল হলো মঙ্গা এলাকা হিসাবে পরিচিত। আমাদের বাবা মা এক দিন কাজ না করলে আমাগো পেটে এক মুঠো ভাত যায় না। কিন্তু বাবা মা কে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে বলে যে, তোমাদেরকে লেখাপড়া করতে হবে না। তার চেয়ে মাঠে কাজ করে নিজের জন্য কিছু করো।

এভাবে হতদরিদ্র ও গরিব বাবা মা ও অভিভাবক আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এই অঞ্চলের মানুষ ক্ষেতে কাজ করে জীবন চালাই। কিছুদিন আগে আমাগো ধান বন্যায় খেয়ে যায়, আর এই অভাবের সময়ে যেন সন্তানের দিকে দেখি তবও যেন আমাগো সন্তান যে মানুষের মত মানুষ হতে পারে। আমরা স্বপ্ন দেখি বড় হওয়ার কিন্তু হেই স্বপ্ন স্বপ্নই থাকে। বর্তমান এই সরকার শিক্ষদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে যাতে করে আমাগোর মতন সকল সন্তান ভালো লেহা পড়া শেখায়। আমাগো সন্তান কলেজ যেন ফাঁকি না করে ,আর যেন শিক্ষকেরা যেন ফাঁকি না দেয়। কিন্তু এহ্যানখার অধ্যক্ষ যেভাবে ছাত্র ও ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা লুটে নেয় তাতে করে আমাগো সন্তানেরা লেহাপড়া ছেড়ে দিবো মনে হয়। এই কলেজের (প্রভাষক ফরিজ উদ্দিন ও অধ্যক্ষ বদ্দিউজ্জামান) আপন ভাই, তাই বলে ক্ষমতা দেখিয়ে হতদরিদ্র সন্তানদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়।

কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা বলে যে, স্যার আমরা এত টাকা দিতে পারবো না যদি টাকা দিতে হয় ৫০০ টাকা করে দিবো। এই কথা বলার পর ওই কলেজের প্রভাষক ফরিজ উদ্দিন রাগান্বিত হয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদেরকে পরীক্ষা হল রুম থেকে বের করে দেন। ওই সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীর হাতে প্রভাষক লাঞ্ছিত হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সেশন ও পরীক্ষা ফি আদায়ের প্রতিবাদে কাচারি মাঠে বিক্ষোভ, কলেজের অফিসে তালা দেয়।

ঘটনাটি ঘটে দাঁতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজে।

এ ব্যাপারে দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে, তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানে পড়তে হলে আমরা যা ফি নির্ধারণ করবো সেটা দিতে হবে।

সাখাওয়াত হোসেন সাখা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) করেসপন্ডেন্ট

 

||আপডেট: ০৬:৫৫ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৫, শুক্রবার

এমআরআর