Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর হামানকর্দি পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন সংকট
চাঁদপুর হামানকর্দি পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন সংকট

চাঁদপুর হামানকর্দি পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন সংকট

আশিক বিন রহিম | আপডেট: ১১:১২ অপরাহ্ণ, ০২ আগস্ট ২০১৫, রোববার

চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের হামানকর্দি পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ে সুনামের সাথে পাঠদান চললেও রয়েছে ভবনের চরম সংকট।

ভবনের চরম সংকটে বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতার সম্মুক্ষিণ হয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।

এ নিয়ে মহাবিপাকে রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।

জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসকে বার বার বলার পরও টনক নড়েনি শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষের।

বর্তমানে ভবন সংকটে জর্জরিত রয়েছে এ বিদ্যালয়টি। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সংলগ্ন হামানকর্দি গ্রামে অত্যন্ত সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ১৯৬৬ সালে ১ জানুয়ারি স্থানীয় খান বাড়ির লোকদের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সুনামের সাথে শিক্ষা দিয়ে আসলেও এ পর্যন্ত ভবন সংকট চলমান অবস্থায় রয়েছে।

হামানকর্দি তথা মৈশাদী ইউনিয়নসহ আস-পাশের ইউনিয়নের বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে অধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে বিদ্যালয়টি।

বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১শ’ ৫৫, সপ্তম শ্রেণীতে ১শ’ ৭৩, অষ্টম শ্রেণীতে ১শ’ ৪০, নবম শ্রেণীতে ১শ’ ২০, দশম শ্রেণীতে ৯০ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে।

সবমিলিয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে ৬শত ৯২ জন। এ ৬শ’ ৯২জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্যে শিক্ষক রয়েছে ১২জন। শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী ১জন শিক্ষার্থীর জন্যে ১ বর্গমিটার জায়গার প্রয়োজন হয়, কিন্তু হামানকর্দি পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১জন ছাত্র ছাত্রী ০.২৬.এর কম জায়গা নিয়ে পাঠদান করে আসছেন।

প্যাসেলেটির যে দুটি ভবন রয়েছে, সে দুটি ভবনে কক্ষ রয়েছে মাত্র ৯টি, এর মধ্যে ২টি কক্ষকে ভাগ করে বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, গ্রন্থাগার, একটি কক্ষ শিক্ষক মিলনায়াতন। আর বাকিগুলোতে শ্রেণীর কার্যক্রম চলে আসছে।

কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণীর বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস নেওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ কক্ষ না থাকায় শিক্ষকদের ক্লাস নিতে সমস্যার সম্মুক্ষিণ হতে হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরাও চরম বিপাকে রয়েছে।

এ প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর শতভাগ সাফল্যের পাশাপাশি রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের এ-প্লাস প্রাপ্তি।

চলতি বছর এ বিদ্যালয়টিতে ১০টি এ প্লাস নিয়ে রীতিমত চাঁদপুরের শিক্ষাঙ্গনে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র- ছাত্রীদের বিনোদনের জন্যে খেলাধূলা বিশাল মাঠও থাকলেও একমাত্র সমস্যাই হচ্ছে শুধু ভবন সংকটের।

বিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষার্থী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমাদের এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণœ রাখার জন্যে আমরা নিয়মিত মনযোগ সহকারে পাঠগ্রহণ করে আসছি, কিন্তু বিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভবন না থাকায় বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের এ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটিতে জরুরিভাবে ভবন না করা হলে পাঠদানে আমাদের মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে।

বিদ্যালয়ের পরিচলনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জামাল খান ও সদস্য মোঃ মুক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার জন্যে নিয়মিত শিক্ষকরা শিক্ষা দিয়ে আসছে, অভিভাবকদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ, মা সমাবেশসহ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্যে মতবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। অভিভাবকদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, কোনো ছাত্র-ছাত্রী যদি একদিন ক্লাসে না আসে, তার খোঁজখবরও নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এতো কিছুর পরও বিদ্যালয়টিতে পর্যাপ্ত ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মনোযোগ হারাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে অধ্যয়নরত রয়েছে।’

ত্র-ছাত্রীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচারণ করে তাদেরকে পড়ালেখার প্রতি উৎসাহ জোগাচ্ছে। কোনো ছাত্র-ছাত্রী যদি পড়ালেখার অমনোযোগী হয়ে পড়ে, তাকে আমাদের বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার জন্যে সকল ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা যখন বিভাগের ক্লাস নিতে যাই, তখন পর্যাপ্ত পরিমাণ কক্ষ না থাকায় পাঠদান করাতে সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসীর একটাই দাবি, বিদ্যালয়টিতে সফলতার ধারা অব্যাহত রাখার জন্যে জরুরিভাবে ভবন করা জন্যে শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির সহযোগিতামূলক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি