করোনার থাবায় সুনসান নীরবতা চাঁদপুর স্টেডিয়াম

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে থামিয়ে দিয়েছে সকল খেলাধুলা। সারা বছরজুড়ে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে ক্রিকেট আর ফুটবল খেলাসহ বিভিন্ন খেলায় ব্যস্ত থাকতো পুরো স্টেডিয়াম এলাকা। কিন্তু গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সুনসান নীরবতা চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠ।

এদিকে ক্রীড়াঙ্গণে করোনার থাবা পড়ায় চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমিতে প্রেকটিসরত খেলোয়াড়দের ভাটা পড়েছে। শুধু তাই নয়, খেলা বন্ধ থাকার পাশাপাশি বিকেলে সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়রা ফুটবল খেলতেন বা শারিরিক কসরত করতেন-সেটিও এখন বন্ধ রয়েছে। স্টেডিয়াম ও আউটার স্টেডিয়াম এলাকায় মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকতো পুরো সময়।

এখানে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও শিক্ষার্থীরাও স্টেডিয়ামে এসে স্টেডিয়ামে খেলাধুলা করতেন বা সময় কাটাতেন। তবে করোনার কারণে স্টেডিয়াম ও আউটার স্টেডিয়াম মাঠ সুনসান নীরবতা।

অন্যদিকে স্টেডিয়ামের সকল গেইটে ঝুলছে তালা। স্টেডিয়ামের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও নিয়মিত অফিস করছেন না। ফলে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠের পুরো পরিবেশ বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাঠে প্রবেশ করলে দেখা মিলবে বড় বড় ঘাস ফুলের সাথে। দেখেই বুজা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে স্টেডিয়াম মাঠটি।

চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমিতে গিয়ে দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের কারণে ক্রীড়াঙ্গণে বিরাজ করছে নীরবতা। তাই আগেরমত আর ক্রিকেটের ব্যাট-বল কিংবা ফুটবলের বুটের আওয়াজ শোনা যায় না। খেলার প্রেকটিসে আসছে মাত্র ৮-১০ জন জুনিয়র খেলোয়াড়। ক্রিকেট প্রেকটিসের স্থানটিতেও জন্মেছে বড় বড় ঘাস।

আউটার স্টেডিয়ামে ক্রিকেট একাডেমিতে কথা হয় অনুর্ধ ১২ দলের খেলোয়াড় মাহাজ, ইলিয়াস, ফাহাদও রাহুলের সঙ্গে। তারা জানান, অনেক দিন ধরে খেলা হয় না। আমাদের সাথের অনেক বন্ধু খেলা ছেড়ে দিয়েছে। করোনার পুরো সময় প্রেকটিস বন্ধ ছিলো। এখন কিছুটা স্বভাবিক তাই কয়েকজন মিলে প্রেকটিস করছি।

অনুর্ধ ১২ দলের কোচার রাজন চৌধুরী বলেন, দুই মাস ধরে একাডেমির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একাডেমিতে প্রায় ২ শতাধিক জুনিয়র খেলোয়াড় আছে। করোনার কারনে ভাটা পড়েছে সকল। ক্রীকেট খেলাতো একাবারেই হয় না। সরকার নির্দেশনা দিলে খেলা শুরু হবে।

ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পলাশ কুমার সোম বলেন, করোনা কারনে ক্রীড়া পাড়ায় আগেরমত আমেজ নেই। কেউ আমাদের নিয়ে ভাবেও না। এ কারনে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। স্টেডিয়ামের দায়িত্বরত কারো চোখে যেনো পড়ছে না মাঠের ঘাসগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। যার কারনে মাঠে খেলারমত কোন পরিবেশ নেই। দ্রুত কর্তৃপক্ষকে মাঠ সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি

চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ শামীম হোসেন ফারুকী বলেন, একাডেমির দুই তিনশ খেলোয়াড় অবসরে রয়েছে। দীর্ঘদিন কোন খেলা হচ্ছে না। ক্রীড়াঙ্গন ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকার অনুমতি দিলে আকের মত প্রেকটিস শুরু হবে। করোনা ও লকডাউনে প্রেকটিস বন্ধ থাকার কারনে অনেক খেলোয়াড় খেলা থেকে সরে গেছে। আবার যখন ডাকবো, তখন বুজা যাবে কোন কোন খেলোয়াড় ঝরে গেলে। আমরা সকলকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমার জানা মতে কোন খেলোয়াড় কিংবা দায়িত্বরত কোঁচরা সহায়তা পায়নি বলে জানান তিনি।

চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু বলেন, আগে নিয়মিত মাটে যাওয়া হতো কিন্তু লকডাউনের কারনে যাওয়া হয়না। বর্তমান পরিস্থিতির কারনে সব ধরনের খেলা বন্ধ রয়েছে। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বভাবিক হলে আগের মত খেলা চলবে।

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম,২১ মে ২০২১

Share