শীর্ষ সংবাদ

চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট

চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন পৌরসভার দুইজন নাগরিক। রিটকারী এই দুই নাগরিক হচ্ছেন পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদের ভাগিনা মাহবুব আলম আখন্দ এবং মেয়রের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার ভাই মোঃ হাসিবুল হাসান।

১৩ সেপ্টেম্বর রোববার হাইকোর্টে বিচারপতি জেবিএম হাসানের কোর্টে এই রিট পিটিশন করা হয়। আজ এই পিটিশনের উপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা রিটের সাথে সাপোর্টিং কাগজ হিসেবে দেয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন বরাবর কয়েকজনের করা আবেদনের কপি। কিন্তু আবেদনকারীদের কয়েকজন অস্বীকার করেছেন তারা আবেদন করেন নি, এমনকি এ সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না।

এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন মোঃ আলাউদ্দিন, পিতা আবুল বেপারী, পুরাণবাজার চাঁদপুর। এছাড়া ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে যেসব কাগজ দেয়া হয়েছে, সেগুলোও ভুয়া।

এদিকে নির্বাচন কমিশন বরাবর হাসিবুল হাসানসহ আরো কয়েকজনের করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান করোনা ভাইরাসে চাঁদপুর পৌরসভায় প্রায় একশ’র মতো লোক মারা গেছে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় ৮-৯ শ’লোক আক্রান্ত।

অথচ সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ করোনা ভাইরাস সংশ্লিষ্ট সকল স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে পুরো চাঁদপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৩ সেপ্টেম্বর মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৬ জন। আর পুরো চাঁদপুর জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২১৯৫ জন। এদের মধ্যে ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে গেছেন ১৮২৮ জন। এদিকে মোট আক্রান্তের মধ্যে পৌরসভাসহ চাঁদপুর সদর উপজেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮৮২ জন, সুস্থ হয়েছে সাত শতাধিক।

অথচ আবেদনে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বলা হয়েছে, পৌরসভায় মারা গেছে প্রায় ১শ’ এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে আক্রান্ত হয়েছে ৮-৯শ’।

এছাড়া নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কয়েকজনের নামে আবেদন করা হয়। সে সব আবেদন যাচাই করে দেখা হয় সেগুলোও ভুয়া এবং ভিত্তিহীন। যেমন কেএম শওকত ও মোঃ বিল্লাল হোসেন নামে দু’জন আবেদন করেন তাদেরকে নতুন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে। অথচ যাচাই করে দেখা গেছে যে, তারা দু’জনই বিদ্যমান ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছেন।

এর জন্যে কেএম শওকত পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের মাদ্রাসা রোড এলাকার ৬৪নং ভোটার। আর ভোটার আইডি নং ১৩০০৭৯০০০১৮০। একইভাবে মোঃ বিল্লাল হোসেনের ভোটার নং ৬৩, ভোটার আইডি নং ১৩০০৭৯০০০১৭৯। এভাবে আরো অনেক আবেদনই ভুয়া প্রমাণিত।

এদিকে রোববার দুপুরের পর নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা রিটের বিষয়টি পৌর নাগরিকদের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে তারা অনেকটা ক্ষুব্ধ হন। তারা বলেন, এমন ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। এ ঘটনা ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। এমন ন্যাক্কারজনকভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। তারা নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তারিখ আগামী ১০ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার জোর দাবি জানান।

আওয়ামী লীগের পৌর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় কমিটির সদস্য ছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জিল্লুর রহমান জুয়েল এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নেতৃবৃন্দ এবং প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দলের মনোনয়ন এবং সমর্থন পেয়ে নির্বাচনের পুরো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছিলাম। এরই মধ্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মারা যাওয়ায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর নির্বাচনের পুনঃ তারিখ ঘোষণা করা হয়। সে মতে আমরা পুনরায় নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হই। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাই। অথচ কুচক্রী মহল এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্যে সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মামলার দিকে গিয়েছে। আমরা মনে করি প্রতিপক্ষের ইঙ্গিতেই এমন কাজটি করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর প্রেসক্লাব,১৩ সেপেটম্বর ২০২০

Share