Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে সাড়ে ৪৫ কোটি টাকা কৃষি-দারিদ্রবিমোচনে ঋণ বিতরণ
krishi loan
প্রতীকী ছবি

চাঁদপুরে সাড়ে ৪৫ কোটি টাকা কৃষি-দারিদ্রবিমোচনে ঋণ বিতরণ

চাঁদপুরে ৮ উপজলোয় ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি ২০টি ব্যাংক ২০১৯-২০ র্অথবছররে অক্টোবর পর্যন্ত ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা কৃষি ও দারিদ্রবিমোচন খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি ঋণ কমিটির সভায় প্রদত্ত এক রির্পোটে বিষয়টি চাঁদপুর টাইমসকে জানিয়েছে।

যা মোট বরাদ্দের বিতরণের ২৬ % ।ওই সব ব্যাংকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৪৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা এবং বেসরকারি ২২টি ব্যাংকে ৬১ কোটি ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আঞ্চলকি র্কাযালয়ের সূত্র মতে ,সোনালী ব্যাংকের ২০টি শাখার মাধ্যমে অক্টোবর পযর্ন্ত ১ কোটি ৮৭ লাখ ৩১ টাকা । যার হার ১৪ %। অগ্রণী ব্যাংকরে ২১ টি শাখার মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৯৩ হাজার। যার হার ২৬ %।

জনতা ব্যাংকের ১৫টি শাখার মাধ্যমে ১ কোটি ৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা। যার হার ১১ %। বাংলাদশে কৃষি ব্যাংকরে ২৮টি শাখার মাধ্যমে ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। যার হার ১৬% । র্কমসংস্থান ব্যাংকরে ৪টি শাখার মাধ্যমে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। যার হার ৫৪% । রূপালী ব্যাংকে মাধ্যমে ১৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা । যার হার ৩৪%। বিআরডিবি ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করছে । যার হার ১০% । বেসরকারি ২২টি ব্যাংকে ৬ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা বিতরণ করেছে ।

এদিকে ওই সব ব্যাংকরে শাখাগুলোতে ২০১৯-২০ র্অথবছরে অক্টোবর পর্যন্ত বকেয়াসহ ৪৩ কোটি ৯৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা বিভিন্ন শ্রেণিকৃত গ্রাহকদরে কাছ থেকে আদায় করেছে। জেলার ২২ বেসরকারি ব্যাংকে এবছর বরাদ্দ ছিলো ৬১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ।

এছাড়া ৩৮১ কোটি ৮৭ লাখ ৮ হাজার টাকা বকেয়া হিসেবে জেলার কৃষি, দারিদ্রবিমোচন ও অন্যান্য খাতে ঋণের টাকা পড়ে আছে। ব্যাংকগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৭৬ কোটি ৬৭ লাখ ৮ হাজার টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন,‘বিভিন্ন শ্রেণিভিত্তিক ঋণ আদায়ে অগ্রণী ব্যাংক গ্রাহকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তগণ যেমন ঋণ আদায় করছে তেমনি তাৎক্ষণিক ঋণ প্রদানও করে যাচ্ছে।’

এদিকে সারা দেশে ৫ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো এখনও তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাছাকাছি যেতে পারেনি। এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৩ ভাগের ১ ভাগ বা শতকরা ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে মাত্র। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় টাকার পরিমাণে ঋণ বিতরণ বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম ৫ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ৮ হাজার ৩০৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।

কেন্দ্রিয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) এর হালনাগাদ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে চিত্র পাওয়া গেছে।

তথ্যমতে, কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এ পর্যন্ত বিতরণ হওয়ায় ৮ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। দেশি-বিদেশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা অনেকগুণ বেশি হলেও তারা বিতরণ করেছে মাত্র ৪ হাজার ২৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

ঋণ-বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) ফসল উৎপাদনে ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা, সেচ ও সেচযন্ত্র ক্রয়ে ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, কৃষিখামারে ১ হাজার ২৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, শস্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা, দারিদ্র্য দূরীকরণে কর্মোদ্যোগে ৬৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক কর্মকাণ্ডে ঋণ বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।​

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় টাকার পরিমাণের বিচারে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৭ হাজার ৪৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। দু’ অর্থবছরের একই সময়সীমার মধ্যে কৃষিঋণ বিতরণের হার প্রায় সমান দেখা গেছে তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে।

খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। এ লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকিংখাতের মোট বিতরণ করা ঋণের কমপক্ষে ২ % কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়।

একই সঙ্গে সুদের সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেয়া হয়েছে ৯ শতাংশ। অনেক ব্যাংকই এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। যেসব ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ কম করে,জরিমানা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। পরের বছর অনর্জিত টাকা পুনরায় বিতরণ করলে কেটে রাখা টাকা ফেরত দেয়া হয়।

সূত্র জানায়,ঋণ বিতরণে ২ শতাংশ বাধ্যতামূলক করে দেয়ায় কৃষিখাতে অর্থের সঞ্চালন বেড়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে।

প্রতিবেদক–আবদুল গনি ,২১ ডিসেম্বর, ২০১৯