চাঁদপুরে শ্রমিক ইউনিয়নের নামে চাঁদাবাজি

‎চাঁদপুর জেলা সিএনজি-অটো রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন ফান্ডের নামে প্রকাশ্যে ব্যাপক চাঁদাবাজি চলছে। যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর চট্ট. ২৫০৩। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত।

এদের দেয়া রশিদে ১০ টাকা চাঁদা লেখা থাকে। তারা রশিদ দেওয়ার সময় গাড়ির নাম্বার, ড্রাইাভারের নাম, তারিখ, সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর বা কোন অফিসিয়াল সিলমোহর কিছুই ব্যবহার করে না।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র যার মাধ্যমে ওই চাঁদা আদায় করা হয় সে একটি বড় আকারের দাগ দিয়ে দেয়। চাঁদা না দিতে চাইলে আদায়কারীরা ড্রাইভারদের মারধর করে সে চাঁদা আদায় করে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রতিনিয়ত এই সমস্যায় সাধারণ অসহায় ড্রাইাভারদের ভোগ করতে হয়।

এ চাঁদাবাজির জন্যে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে সিএনজি-অটো চালকরা।

এ ব্যাপারে ক’জন সিএনজি-অটো চালক সুমন সরকার. জসিম বেপারী, খোকন হাওলাদার, রফিক, রতন, মনির, কাদির, শফিক মিজি, কুদ্দুস মৃধা, আক্কাছ মজুমদার, বিল্লাল দরজি, জাকিরসহ অনেকেই জানান, প্রতিদিন হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর আসার পথে কমপক্ষে ১০ জায়গায় দশ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। এভাবে গড়ে চাঁদপুরে নি¤েœ ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার মত গাড়ি চলাচল করে’ টাকা চাঁদা দিয়ে এবং মালিকদের দৈনন্দিন ভাড়া দিয়ে আমাদের আর হাতে তেমন একটা কিছু থাকে না। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা খুবই অসহায়ভাবে দিনাতিপাত করছি। এই চাঁদার টাকা দৈনিক লক্ষাধিক জমা হয় কোথায় তা কি কোন শ্রমিকের কাজে লাগে না। দু’বছর ধরে এই চাঁদা আদায়ের টাকা আদায় হয় ঠিকই তা সম্পূর্ণ আদায়কারী ও এর পেছনের নাটেরগুরুদের পেটে হজম হয়ে যায়। এই টাকা কোন শ্রমিকের দুর্ঘটনা বা অসুখবিসুখে কাজে লাগছে না। রোড় এক্সিডিট হয়ে অনেক ড্রাইভারের পরিবার না খেয়ে মরছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজারের অটো সিএনজির টোল আদায়ের নামে দুটি জায়গায় চাঁদা গ্রহণ করা হয়। এরপর বলাখাল শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে চাঁদা নেয়া হয়। এরপর বাকিলা, মহামায়া, বাবুরহাট, ওয়ারলেছ, চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এবং কালীবাড়ি গুয়াখোলার মোড় এলাকায় অটো সিএনজির চালকদের কাছ থেকে চাঁদা গ্রহণ করা হয়। চাঁদার রশিদেও কাদের টাকা দেয়া হচ্ছে তার কোন নাম-ঠিকানা নেই।

শুধু চারটি নাম্বার দেওয়া আছে যার নং ০১৮১৮৫৭৬৯৪১-০১৯১৭৮৮৫৭৪৫-০১৭৩৫২৮৬২৬৬-০১৭৫২১৬৪০২৭। শুধু তাই নয়, গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো শহরের বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টে ট্রাফিকরা ৫০ থেকে ১শ’ টাকা করে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা গ্রহণ করে থাকে। শুধু তাই নয়, টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের গায়ে পর্যন্ত হাত তোলা হয়।

অন্যদিকে তাতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে ওই চালককে গাড়িসহ থানায় নিয়ে আরো বেশি চার্জ করে গাড়িটি আটকে রাখা হয়। চাঁদপুর জেলার শুধু কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটেই নয়, উপজেলার হাইমচর বাজার, ফরিদগঞ্জ বাজার, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি, কচুয়ার সর্ব জায়গায়ই অটো সিএনজি চালকদের কাছে চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে।

একটি সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্নস্থানে সিএনজি অটো রিকশা থেকে উত্তোলনকৃত টাকার ভাগ অনেক উচ্চ পর্যায়ের লোকজনই পেয়ে থাকে বলে এই চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাচ্ছে না।

জাবেদ হোসেন : ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

এমআরআর/জেএইচ/২০১৫

 

Share