চাঁদপুরের ঔষধ কর্মচারীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কেমিস্টস এন্ড ড্রাগ্রিস্ট সমিতির হঠাৎ সিদ্ধান্তে চাঁদপুর শহরে সপ্তাহের প্রতি শনিবার ঔষধের দোকান বন্ধের কারনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও রোগীর লোকজন।
এর বাইরে সমগ্র পুরো এমআরপি থেকে ৫ পার্সেন কমিশনে ঔষধ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হয়। আগে যেখানে রোগীরা ১০ পার্সেন কমিশনে ঔষধ ক্রয় করতেন। এখন রোগীরা তা থেকে বঞ্চিত হয়ে মাত্র ৫ পার্সেন কমিশনে ঔষধ ক্রয় করছেন।
সমিতির এমন সিন্ধান্তে একদিকে ঔষধ কর্মচারীরা খুশি হলেও অন্যদিকে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। এছাড়াও এমন সিদ্ধান্ত স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছেন না খুচরা ঔষধ বিক্রেতারা।
জানাযায়, গত ৩ মার্চ থেকে চাঁদপুর শহরের কালী বাড়ি হতে শুরু করে ওয়্যারলেস পর্যন্ত রেললাইনের দক্ষিণ পাশে এবং উত্তর পাশে থাকা সকল ঔষধের দোকান পর্যায়ক্রমে প্রতি শনিবার বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে সপ্তাহের এক শনিবার রেললাইনের দক্ষিন পাশ এবং আরেক শনিবার রেললাইনের উত্তর পাশে থাকা সকল ঔষধের দোকান বন্ধ রাখার জন্য প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লিখিত চিঠি প্রদান করেন চাঁদপুর কেমিস্টস এন্ড ড্রাগ্রিস্ট সমিতি। তারপর থেকেই সপ্তাহের প্রতি শনিবার পর্যায়ক্রমে চাঁদপুর শহরের রেললাইনের দক্ষিন পাশ এবং উত্তর পাশের সকল ঔষধের দোকান বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সমিতির এমন হঠকারী সিদ্ধান্তে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগনের। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ডাক্তার দেখাতে আসা অনেক রোগী ও রোগীর লোকজন অভিযোগ করে বলেন, আমরা অনেক দুর থেকে গাড়ী ভাড়া দিয়ে ডাক্তার দেখাতে শহরে এসেছি। কিন্তু দেখা যায় ডাক্তার দেখানোর পর ঔষধের দোকান বন্ধ থাকার কারণে আমাদেরকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। দেখাযায় আমরা ডাক্তার দেখালাম মিশন রোড অথবা বাসষ্ট্রান্ট কিংবা ওয়্যারলেসে কিন্তু রেললাইনের উত্তর পাশে থাকা সকল ঔষধের দোকান বন্ধ থাকার কারণে গাড়ি ভাড়া দিয়ে সময় অপচয় করে ঔষধের জন্য কালী বাড়ি রেললাইনের দক্ষিণ পাশে যেতে হচ্ছে।
এছাড়াও শহরের অনেক খুচরা ঔষধ বিক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, তারা খুচরা ঔষধ বিক্রেতা। শহরের বড় বড় ঔষধের দোকানে অনেক কর্মচারি থাকে। সপ্তাহের প্রতি শনিবার বন্ধ রাখার নিয়মটা পাইকারী ঔষধ বিক্রেতারা অথবা যাদের বড় দোকান রয়েছে তারা পালন করতে পারেন। এভাবে যদি প্রতি সপ্তাহে খুচরা বিক্রেতারা দোকান বন্ধ রাখে তাহলে রোগীর সাথে সাথে আমাদেরকেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের একাধিক খুচরা ঔষধ বিক্রেতারা বলেন, সমিতির এমন সিদ্ধান্ত আমরা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছি না।
এ নিয়ে কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি কর্তৃপক্ষ শহরের প্রত্যেক ঔষধ ব্যবসায়ীদের লিখিত চিঠি প্রদান করেন। আর ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১ মার্চ থেকে সমগ্র জেলায় এম আর পি থেকে ৫ পার্সেন কমিশনে ঔষধ বিক্রি করতে হবে।
যদি কোন প্রতিষ্ঠান এমন সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আর সে থেকেই প্রতি শনিবার চাঁদপুরে চলছে রোগীদের ঔষধ দুর্ভোগ।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর কেমিস্টস এন্ড ড্রাগ্রিস্ট সমিতির সভাপতি মোস্তাফা রুহুল আনোয়ার জানান, বিভিন্ন ঔষধের দোকানের কর্মচারীরা প্রতি সপ্তাহে ছুটির জন্য আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করেন। তাদের দাবি তারা যদি সপ্তাহে একদিন ছুটি না পান তাহলে সকল ঔষধ কর্মচারীরা তাদের চাকরি ছেড়ে দিবেন। তাদের এমন দাবি পূরন করতে গিয়েই ১ মার্চ থেকে প্রতি শনিবার পর্যায়ক্রমে চাঁদপুরের সকল ঔষধের দোকান বন্ধ রাখা হয়।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি