Home / শীর্ষ সংবাদ / ২৪ ঘন্টায় চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু
চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে

২৪ ঘন্টায় চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু

জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গে চাঁদপুরে আইসোলেশনে ৩ জনসহ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৪ জন, হাজীগঞ্জে ৩ জন, ফরিদগঞ্জে ১ জন এবং মতলব উত্তরে ২ জন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত এই ৯ জনের মৃত্যু হয়।

১২ জুন শুক্রবার সকালে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। মৃতরা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার দিবাকর (৫০), চাঁদপুর শহরের দক্ষিণ গুনরাজদী এলাকার মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ( ৬৭) ও শহরের গুয়াখোলার বাসিন্দা জয়দল (৬৩)। চাঁদপুর সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, সবাই করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হয়েছিল। তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় ভর্তি হন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় মারা যান। গুয়াখোলার জয়দল (৬৩) বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ভর্তি হন। শুক্রবার সকাল ৯টায় মারা যান।

ফরিদগঞ্জের দিবাকর (৭৩) গত ৮ জুন ভর্তি হন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় মারা যান। চাঁদপুর সদরে মৃতরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, জয় দল, মোফাজ্জল হোসেন ও শহীদ কাজী।

এর মধ্যে রুহুল আমিন ও জয়দল আইসোলেশন, বৃহস্পতিবার রাতে চাঁদপুর পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো, মোফাজ্জল হোসেন পাটওয়ারী (৮০) করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৭নং তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ কাজী ঢাকার একটি হাসপাতালে শুক্রবার বেলা ১১টায় মারা যান। তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যাসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকা গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিকাল ৫টায় আলী দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে দাফন করা হয়।

হাজীগঞ্জ উপজেলায় মৃত ৩ জন হলেন আব্দুল মোমেন, মো. আবুল বাশার এবং মরিয়ম বেগম। উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের বাউড়া সর্দার বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মোমেন (৫৮) বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় আলীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। শুক্রবার সকাল ৮টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে শুক্রবার করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আবদুল আউয়ালের বাবা মো. আবুল বাসার (৭৫) শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় মারা গেছেন। ছেলে আবদুল আউয়ালের মৃত্যুর পর তার বাবার জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

অন্যদিকে উপজেলার ৪নং কালচো দক্ষিণ ইউনিয়নের মাড়ামুড়া গ্রামের মরিয়ম বেগম (৫৫) নামে এক গৃহিণী করোনা উপসর্গে শুক্রবার দুপুর ১২টায় মারা যান। তিনি ওই বাড়ির মৃত মোহাম্মদ উল্লাহ স্ত্রী । ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরহুমাকে দাফন করা হবে।

মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের কাতারিকান্দি গ্রামে করোনা উপসর্গে মো. জামান নামে এক বালকের মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। শুক্রবার সকাল ৭টায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। ওই বালক বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মৃতের নমুনা সংগ্রহ করেছে।

এদিকে একই ইউনিয়নের আমিরাবাদ এলাকার মিরপুর (মিরাকান্দি) গ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ নিয়ে চট্রগ্রাম ফেরত মোঃ শামসুল হক (৬২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুু হয়েছে। সে চট্রগ্রাম জুটমিল-এ চাকুরী। সে ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের মিরপুর (মিরাকান্দি) গ্রামের মৃত সিদ্দিক মোল্লার ছেলে। তিনি ১ ছেলে ও ৪ মেয়ের জনক।

১৩ জুন শনিবার ভোরে ৪টার দিকে গ্রামের নিজ বাড়িতেই মারা যান। মোঃ শামসুল হক (৬২) বৃহস্পতিবার চট্রগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়িতে আসে। মোঃ শামসুল হক (৬২) করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.নুশরাত জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চাঁদপুর সিভিল সার্জন মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলায় মোট ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে মৃত্যুর পর পজিটিভ প্রতিবেদন আসে ২৯ জনের।

চাঁদপুর করেসপন্ডেট,১৩ জুন ২০২০