Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / চাঁদপুরের রকমাতুন্নেছার আর কত বয়স হলে জুটবে বয়স্ক ভাতা
bata

চাঁদপুরের রকমাতুন্নেছার আর কত বয়স হলে জুটবে বয়স্ক ভাতা

বয়সের ভারে দেহ নুয়ে পড়া মা, বাবা, স্বামী এবং সন্তান হারা নিঃস্ব বৃদ্ধা রকমাতুন্নেছার জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তার ভাগ্যে বয়স্ক ভাতা জোটেনি। নুয়ে পড়া দেহখানি নিয়েই প্রতিদিন গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন জনের দ্বারপ্রান্তে ভিক্ষা বৃত্তির হাত বাড়িয়ে দিয়ে লোকাল ট্রেনের মতো চলছে তার জীবন।

নিঃস্ব এই জীবন নৌকা চলার জন্য আজো কারো কাছে আর্থিক কোন সহযোগিতা পাননি। তেমন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পাওয়ার জন্য তেমন কেউই নেই তাকে পথ বাতলে দেবার। তাই অসহায়ত্বকে মেনে নিয়েই নিষ্পাপ শিশুর মতো চলছে তার জীবন তরী। এই ৭৫/৮০ বছর বয়সেও তারর ভাগ্যে হয়নি সরকারি ভাতা পাবার।

পঁচাত্তর বছর বয়সী রকমাতুন্নেছা চাঁদপুর সদর উপজেলার রামদাসদী গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের মেয়ে। বাবা, মাকে হারিয়েছেন বহুবছর আগেই। নিঃসন্তান রকমাতুন্নেছার স্বামী মারা যান প্রায় ৯ থেকে ১০ বছর পূর্বে। তাই তিনি নিঃশ্ব। দেখ ভাল করার জন্য কেউই নেই। স্বামী মারা যাবার পর থেকে ভিক্ষা বৃত্তি করে কয়েক বছর চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কোট স্টেশনে ছাপড়া ঘরে দিন কাটিয়েছেন।

বর্তমানে দোকানঘর আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশে পালক মেয়ের সাথে একটি ছাপড়া ঘর তৈরি করে দিন পার করছেন। প্রতিদিন পূর্ব আকাশে সূর্য হেসে উঠলেই পেটের দায়ে ভিক্ষা বৃত্তি করতে বিভিন্ন জনের দ্বার প্রান্তের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন তিনি। এদ্বার ওদ্বার ঘুরে ফিরে যা পান তাতেই কোন রকম তার প্রতিদিনের সূর্য অস্তে যায়।

বৃদ্ধা রকমাতুন্নেছা জানান, তাদের মূল বাড়ি ছিলো চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে। আজ থেকে প্রায় ৪০/৫০ বছর আগে নদী গর্ভে তাদের ভিটে মাটি বিলিন হয়ে যায়। তার পর থেকে আশ্রয় নেন রামদাসদী এলাকায়। পর্যায়ক্রমে মা, বাবা, ভাই বোন এবং স্বামীকে হারিয়ে তিনি একেবারেই নিঃশ্ব। তার কোন সন্তান না থাকায় একটি মেয়েকে পালক এনে লালন পালন করেছিলেন। বর্তমানে সেই পালিত মেয়ের কাছেই দোকান ঘর আশ্রয়ন প্রকল্পের নিকট নদীর পাড়ে একটি ছাপড়া তৈরি করে কোন রকমে দিন পার করছেন।

তিনি জানান,এই পঁচাত্তর বছর বয়সে এসেও তিনি কোন প্রকার বয়স্ক ভাতা পাননি। এমন কি হত দরিদ্রদের জন্য সরকারের দেয়া কোন সাহায্য সহযোগিতা তার কপালে জোটেনি।

চাঁদপুর সমাজ সেবা কার্যালয়, রাজনীতিবিদ, জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সুদৃষ্টিতে জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসেও যদি রকমাতুন্নেছা সরকারি অনুদান হিসেবে বয়স্ক ভাতা পান, তাহলে হয়তো দীর্ঘ জীবনের শত ক্লান্তির অবসান ঘটিয়ে অন্তত তৃপ্তির ঢেকুর গিলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারবেন নিঃশ্ব রকমাতুন্নেছা।

প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি