Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি
চাঁদপুরের ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি

চাঁদপুরের ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদকে জাতিসংঘের স্বীকৃতি

বাংলাদেশে সবজি চাষের ভাসমান পদ্ধতিকে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা- এফএও। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।

বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি নূর আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলা ডাকাতিয়া নদীতে খাঁচায় মাছচাষ, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া ও বরিশালের কিছু এলাকায় প্রায় দুইশ’ বছর ধরে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে আসছেন কৃষকরা। নদী ও খাল-বিলে ভাসমান কচুরিপানা পচিয়ে তার সঙ্গে সামান্য মাটি মিশিয়ে সেখানে সবজি চাষাবাদ করা হয়।

চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সরকার এই চাষাবাদ পদ্ধতিকে ‘গ্লোবালি ইম্পর্ট্যান্ট অ্যাগ্রিকালচারাল হেরিটেজ’ বা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণার জন্যে এফএও’এ কাছে প্রস্তাব পাঠায়।

মঙ্গলবার ইতালির রোমে এফএও’র সদর দপ্তরে বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বিষয়টি উপস্থাপন করেন। ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদের বিষয়টি উপস্থাপনের আধ ঘণ্টার মধ্যেই সদর দপ্তর থেকে এ বিষয়ে ঘোষণা আসে।

বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি নূর আহমেদ জানিয়েছেন, ঘোষণার ফলে এই অঞ্চলকে ঘিরে কৃষিভিত্তিক পর্যটন শিল্প গড়ে উঠবে যা স্থানীয় কৃষি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

এফএও’র ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, সবজি ও মশলা চাষাবাদের জন্য ভাসমান বাগান পদ্ধতির কৃষিচর্চা, স্থানীয়ভাবে ‘ধাপ’ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় জেলাগুলোর জলাভূমিতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয়। এ ধরনের চাষাবাদের মাধ্যমে পানিতে সহজলভ্য কচুরিপানা, যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘আইকোর্নিয়া ক্রাসাইপস’, এবং অন্যান্য জলজ আগাছার সদ্ব্যবহার হয়।

অঞ্চলটিতে প্রাচীনকাল থেকে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ প্রচলিত। অনন্য এই উৎপাদন পদ্ধতি স্থানীয়দের মাধ্যমে প্রাচীন থেকে আধুনিকতর রূপ লাভ করেছে দিনে দিনে। স্থানীয়দের ৬০-৯০ শতাংশ মানুষের জীবিকা অর্জনের মাধ্যম এটি।

এ পদ্ধতিতে খোলা পানিতে মাছ চাষ হলেও মধ্যখানে জেগে ওঠা আধা-ভাসমান ভূমিতে শস্য ফলানো হয়। এর মাধ্যমে ভূমির বহুবিধ ব্যবহার এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষি জীববৈচিত্র্যের স্থায়ী সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া কীটপতঙ্গ ও জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কাও ন্যূনতম হওয়ায় সার তেমন ব্যবহার করা হয় না, কারণ পানিতে পচে যাওয়া কচুরিপানা জৈব সারে পরিণত হয়।

দক্ষিণ উপকূলের জলাভূমি থেকে দেশের অন্যান্য জলাভূমিতে একই পদ্ধতিতে চাষাবাদ সম্প্রসারণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা সংস্থা (বিএআরআই) ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (ডিএই) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এফএও।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট || আপডেট: ১০:০৮ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

এমআরআর