Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরসহ সারাদেশে ঝরছে বৃষ্টি : কমেছে তাপমাত্রা
Rain,-Bristi
ফাইল ছবি

চাঁদপুরসহ সারাদেশে ঝরছে বৃষ্টি : কমেছে তাপমাত্রা

চাঁদপুরসহ সারাদেশে আজ শুক্রবার সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে। শুরুটা অবশ্য গভীর রাত থেকেই। বৃষ্টির সঙ্গে হিমও যোগ হয়েছে সেরকম। সাপ্তাহিক ছুটি বলে কর্মজীবী মানুষ অফিসে যাওয়ার ঝক্কি থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে বাজারগুলোতে ভিড় রয়েছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই অনেকে সেরে নিচ্ছেন বাজারের ঝামেলাটা।(খবর প্রথম আলো)

জানুয়ারির শুরুতে বৃষ্টি হবে, শীত বাড়বে—এমন পূর্বাভাস আবহাওয়া অধিদপ্তর অবশ্য আগেই দিয়েছে।

গত কয়েক দিনে রোদ থাকায় রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু এলাকায় শীতের অনুভূতি কিছুটা কম। এই পরিস্থিতি আজ শুক্রবার থেকেই বদলে গেছে। আজ বৃষ্টির দিন। এর পরই আসছে হাড়কঁপানো শীত।

চলতি জানুয়ারি মাসের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে দুটি শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে মৃদু থেকে মাঝারি। মাসের বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক বৃষ্টিও হতে পারে। এর ফলে গত ডিসেম্বরের চেয়ে এ মাসে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলে এ মাসে শীতের তীব্রতা বাড়বে। আবার রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি হলে শীতের তীব্রতা বাড়বে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মৃদু বৃষ্টি হলেও পুরো মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল তার চেয়ে কম হয়েছে। গত ৩০ বছরের গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ডিসেম্বরে ৪৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ডিসেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। এর ফলে উপকূলসহ দেশের এলাকায় কয়েক দিন বৃষ্টি হয়ে থাকে। এবার কোনো নিম্নচাপ হয়নি।

চলতি জানুয়ারি মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বৃষ্টিও হতে পারে।
গত ৩০ বছরের গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ডিসেম্বরে ৪৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে।
ডিসেম্বরে আবহাওয়ার আরেকটি ধরন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম।

ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়ার আরেকটি ধরন ছিল, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি কম আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৩০ ডিগ্রি কম। যে কারণে গত মাসে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হয়েছে। আরেকটি কারণ ছিল, গত মাসে নেপাল ও ভারতের বিহার-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত একটি মেঘমালা বিস্তার লাভ করেছিল। যে কারণে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাসের শেষ দুই সপ্তাহে সূর্যের আলো কম দেখা গেছে। ফলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য কম ছিল। তাপমাত্রা যতটা না কমেছিল শীতের অনুভূতি তার চেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছিল বলে জানান আবহাওয়াবিদেরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ ছিল না। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ছিল ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের কয়েকটি এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মৃদু বৃষ্টিও হয়েছে। কক্সবাজারে দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে, ১১ মিলিমিটার। রংপুরের বেশির ভাগ জেলায় চার থেকে পাঁচ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শীত ও শৈত্যপ্রবাহ এবং সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সভার পর সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ৬৪ জেলায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডার থেকে ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ১০০টি কম্বল এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ২১ হাজার ৮০০টি কম্বল (মোট ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৯০০) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথম শীতার্ত শিশুদের মধ্যে শীতবস্ত্র ও শিশুখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শাহ কামাল, অতিরিক্ত সচিব মো. আকরাম হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মহসীন এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শামছুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বার্তা কক্ষ,৩ জানুয়ারি ২০২০