গর্ভাবস্থায় স্ত্রী মিলনে চিকিৎসা বিজ্ঞান যা বলে

গর্ভাবস্থায় স্ত্রী সহবাস সম্পর্কে নানান জনে নানান কথা বলে থাকেন । তবে ওই সময়ে সকল দিক বিবেচনা করেই প্রত্যেক নারীর সর্বাধিক নিরাপদে থাকার চেষ্টা করা উচিত।

আপনি হয়তো জেনেও থাকবেন যে – সন্তান জরায়ু মুখের অনেক ভিতরে একটি তরল ভর্তি থলির মধ্যে নিরাপদে থাকে। গর্ভাবস্থায় সহবাস বা যৌনমিলনে সন্তানের ক্ষতি হয়েছে এমন ধারণা চিকিৎসা শাস্ত্রে কোথাও এখনও প্রমানিত হয়নি।

গর্ভাবস্থায় প্রণয়পূর্ণ শারীরিক সম্পর্ক আপনার ভাল থাকার জন্য জরুরি ও যৌনমিলন স্ত্রীকে প্রসববেদনার জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করে।

স্ত্রীর যদি পূর্বে গর্ভস্রাব (মিসক্যারেজ), অকাল প্রসববেদনা অথবা গর্ভের ফুল নিম্নমুখী থেকে থাকে তবে তাকে গর্ভাবস্থার কিছু সময়ে যৌনমিলন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

অনেক সময় যৌনমিলনের পর মৃদু সঙ্কোচন অনুভূত হয়। কিন্তু এই সঙ্কোচন মানে প্রসব বেদনা নয়। তবে যদি স্ত্রীর ডেলিভারির সময় অল্প কয়দিনের মাঝেই হয় তাহলে মৃদু সঙ্কোচন থেকে প্রসব বেদনাও উঠতে পারে। পুরুষের বীর্যে ‘প্রোস্টাগ্লানডিস’ নামক এক রকম উপাদান থাকে যা জরায়ু মুখকে নরম করে এবং স্তনের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। এই উদ্দীপনায় এক বিশেষ ধরণের হরমোন নিঃসৃত হয় যা জরায়ুর সঙ্কোচন আরম্ভ করে।

পিতা-মাতা চুম্বন, আদর, একে অপরকে ধরে রাখার মত অন্যান্য ধরণের অন্তরঙ্গতায় লিপ্ত হতে পারে কারন অনেক নারী গর্ভাবস্থার শেষের দিকে যৌনমিলনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। এটা কেবল তাদের দৈহিক আকার এর জন্য নয় বরং আসন্ন প্রসব এর চিন্তা এবং নতুন মাতা হওয়ার উত্তেজনা থেকে হয় এমনটি হয়।

অনেক দম্পতির জন্য গর্ভাবস্থায় মিলন নিরাপদ হলেও এটা সহজ মনে হয় না। যৌন মিলনের জন্য আপনাকে অন্য ধরণের অবস্থান চেষ্টা করে দেখা লাগতে পারে।

গর্ভাবস্থায় আপনার স্বামী আপনার ওপরে স্থান নিয়ে মিলন করতে গেলে আপনি সমস্যা অনুভব করতে পারেন। এটা কেবল আপনার পেট এর আকারের জন্য নয় বরং আপনার স্তন সেই সময় অনেক নাজুক থাকে। আপনার স্বামী অতিরিক্ত প্রবেশ করালেও আপনি সমস্যা অনুভব করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনি কাত হয়ে শুতে পারেন অথবা আপনার স্বামী আপনার সামনে অথবা পিছনে থেকে স্বামী লিপ্ত হতে পারেন।

এছাড়া সর্বাবস্থায় পায়ু পথে মিলন করা থেকে বিরত থাকা ভাল। আপনার যদি গর্ভকালীন রক্তক্ষয় হয় তবে এই ধরনের মিলন না করা ভাল। উদ্বেগের বিষয় এই যে এর ফলে ক্ষত সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া আপনার পায়ু হতে জরায়ু পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।

অনেক নর-নারী আবার গর্ভাবস্থায় যৌনসঙ্গম করাকে একান্তভাবে পছন্দ করে না। তার কারণ হলো, গর্ভাবস্থায় যৌনসঙ্গমের কতগুলো যুক্তি আছে। নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো-

যে কারণে গর্ভাবস্থায় যৌনসঙ্গম করা উচিত নয় :-

যাদের ধারনা যৌনমিলন কেবল গর্ভের জন্যই, তারা অহেতুক এই মিলনের পক্ষপাতী নয়।

গর্ভাবস্থায় সঙ্গমের সময় ঠিকমত পদ্ধতি না জানলে বা ধাক্কা লাগলে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে।
পেটে ব্যথা, মৃদু রক্তপাতও হয়ে থাকে।

আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ধাক্কা লেগে গর্ভপাত না হলেও নবজাতক শিশু হতে পারে বিকলাঙ্গ।

গর্ভাবস্থায় যৌনসঙ্গম সস্পর্কে যুক্তি :-
বেশী আনন্দ নর-নারীর জীবনের প্রধান কথা। গর্ভাবস্থায় ছয়মাস পর্যন্ত এই পূর্ণ আনন্দ বিরাজ থাকে।

প্রথম ছয়মাস গর্ভপাতের ভয় বিশেষ থাকে না, তখন যৌনসঙ্গম হতে থাকে।

গর্ভাবস্থায় যৌনমিলনের জন্য বিশেষ আসন অবলম্বন করা উচিত। গর্ভাবস্থায় যেসব আসনে পেটে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভবনা কম সেইসব আসনে সঙ্গম করা যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় সঠিক আসনে সেক্স করলে গর্ভস্থ সন্তান বা প্রসূতির কারও পক্ষে ক্ষতিকর হয় না।

৬-৭ মাস থেকে অনেক নারীর প্রচন্ড যৌন আকাঙ্খা জেগে ওঠে। তখন যৌনসঙ্গম না হলে মানসিক ক্ষতি হয়। তাই সেইসময়ে যৌনসঙ্গম না করেও আপনার স্ত্রীকে সঙ্গমবীহিন যৌনতার মাধ্যমে কিছুটা তৃপ্ত রাখতে পারেন।

ডেস্ক :  আপডেট ৭:০০ এএম,  ০৩ মে  ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share