রাজনীতি

কোনো পদে দায়িত্ব পালন করবেন না সেলিম ওসমান

সংসদ সদস্য পদসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদধারী সেলিম ওসমান সেসব পদে দায়িত্ব পালন না করার ঘোষণা দিয়েছেন।

নারায়গণগঞ্জ পিয়ারা সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কান ধরে উঠবস ঘটনা কেন্দ্র করে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ওসমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ভাল কথা। তিনি তো মন্ত্রী। আমি কিন্তু শিক্ষককে বরখাস্তের কথা বলিনি। বলেছিলাম, তদন্ত করতে। প্রয়োজনে বরখাস্ত করা যেতে পারে। এটা তো কোনো সাংবাদিক ভাইরা লেখেননি।

‘তবে আমি বলে দিচ্ছি, আমি সেলিম ওসমান সংসদ সদস্য, বিকেএমইর সভাপতি, আরও কিছু ব্যবসায়ীক সংগঠনের উচ্চপদে আছি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি সেসব পদে দায়িত্ব পালন করব না। এটাকে বলে পদত্যাগ। আমি পদত্যাগ করলাম। সংসদেও যাব না, যতদিন তদন্ত শেষ না হবে।’

নারায়গণগঞ্জ ক্লাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়েছিল।

সেলিম ওসমান বলেন, আমি কিন্তু বারবার বলে দিচ্ছি, আমি কোনো শিক্ষককে শাস্তি দিইনি। শাস্তি দিয়েছি, ইসলামকে কটাক্ষকারীকে। আমার নামে হাই কোর্ট রুল জারি করেছে। সমস্যা নেই। যে সরকারি অফিস আদালত আমাকে ডাকবে, আমি সেখানেই যাব। শাস্তি হবে হোক। মাথা পেতে নেব। ফাঁসি দেবে, সমস্যা নেই।

এসময় খুব চড়া গলায় তিনি বলে উঠেন, আল্লাহকে কটাক্ষকারী ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়ার অপরাধে যদি আমার ফাঁসিও হয় আমি মেনে নেব।
দেশজুড়ে আপনার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী হচ্ছে, এ অবস্থায় ক্ষমা চাইবেন কি-না, প্রশ্নের জবাবে সেলিম ওসমান বলেন, কার কাছে ক্ষমা চাইব। প্রধান শিক্ষকের কাছে? আরে উনার সঙ্গে তো আমার ভীষণ ভাল সম্পর্ক। এখানে আসার আগেও আমাকে তিনি ফোন দিয়েছিলেন। বলেছেন, ব্রেনের চিকিৎসা করাতে ব্যাঙ্গালুর যেতে চাচ্ছেন তিনি। আর ঘটনার প্রথমদিন থেকে তিনি বলেই আসছেন, আমি তাকে প্রাণে রক্ষা করেছি। যেজন্য আজ তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন।

সেলিম ওসমান বলেন, ক্ষমা চাওয়ার পরদিন পারিবারিকভাবে ওই স্কুলের একটি প্যাডে লিখে আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শ্যামল কান্তি ভক্তের পরিবার। এমন চিত্রের মাঝে কোন যুক্তিতে ক্ষমা চাইব, আসলে ক্ষমাটা চাইব কার কাছে?

‘আর আল্লাহর বিরুদ্ধে যে কথা বলেছেন, তার কাছে আবার কীসের ক্ষমা। কানে ধরার কিছুক্ষণ আগে তিনি আমার কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি কী আল্লাহকে কটুক্তি করে কিছু বলেছেন? তিনি বলেছেন- আমার ব্রেনে একটু সমস্যা আছে। দুই বছর আগে আমার ব্রেনস্ট্রোক হয়েছিল। আমি যে কী বলেছি, নিজেও জানি না। আল্লাহকে কটুক্তি করে কিছু বলে থাকতে পারি।

তখন তার কথা অনুযায়ীই কানে ধরে উঠবস বাস্তবায়ন করা হয়। হ্যাঁ, উঠবসের সময়, আমি আঙুল রাঙিয়েছিলাম। সেটা করেছিলাম, উত্তেজিত জনতাকে একটু প্রশমিত করতে।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৩:৩৫ এএম, ২০ মে ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ

Share