Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে ৮ উপজেলায় ৩৬ হাজার মানুষ পাবেন করোনার টিকা
corona vaccine

চাঁদপুরে ৮ উপজেলায় ৩৬ হাজার মানুষ পাবেন করোনার টিকা

চাঁদপুরে প্রথম ধাপে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ৩৬ হাজার জনকে। ওয়েবসাইটে চলছে নিবন্ধন। এ পর্যন্ত কত জন টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন তা জানা না গেলেও টিকা গ্রহণে বিভিন্ন পর্যায়ের পেশাজীবীদের আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে।

২৬ লাখ জনগোষ্ঠির জেলা চাঁদপুরে চাহিদার বিপরীতে করোনাভাইরাসের টিকার কোনও সংকট হবে না বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলায় আসা সাত হাজার ২০০ ভায়াল করোনার টিকা রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের ইপিআই ভবনের দুটি ফ্রিজে।

৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে তা পাঠানো হবে সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ৭ ফেব্রুয়ারি রোববার চাঁদপুরের আটটি উপজেলায় করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। যাদের টিকা দেওয়া হবে তারা আধাঘণ্টা চিকিৎসকদের অবজারবেশনে থাকবেন। করোনা টিকা নিতে উৎসাহিত করতে মসজিদের মাইকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টিভিতে প্রচারণা চলছে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের তালিকা চেয়েছে। তবে আমরা তালিকা এখনও দিতে পারিনি। প্রথমধাপে ৩০ জনের তালিকার কথা বলা হয়েছে। তবে টিকা নিতে সাংবাদিকদের আগ্রহ খুবই কম। হয়তো পরবর্তীতে তাদের আগ্রহ বাড়বে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম কাউছার হিমেল বলেন, এ উপজেলায় প্রথমধাপে তিন হাজার জনকে টিকা দেওয়া যাবে। সুরক্ষা ওয়েব সাইটের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। যাদের টিকা দেওয়া হবে তাদের ব্যাপারে ঢাকা থেকেই আগের দিন আমাদের তালিকা পাঠানো হবে। তিনি বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের যারা আছেন তাদের টিকা দেবো। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমি নিজে থেকে ১৫ জনের নিবন্ধন করিয়েছি। আশা করি, আমাদের দেখে অন্যদের আগ্রহ বাড়বে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা পলিন বলেন, ১৫টি ক্যাটাগরির মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধিদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কেমন তা এখনও বুঝতে পারছি না। কতজন এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন বা তালিকাভুক্ত হয়েছেন তা আমার জানা নেই।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোয়েব আহমেদ চিশতী বলেন, আমি ৪০ জন সাংবাদিকের তালিকা পাঠিয়েছি। এখানে আগ্রহ আছে। তবে আগে আগে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য কোনও তদবির নেই।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমাদের এখানে এসেছে সাত হাজার ২০০ ভায়াল। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডব্লিউএইচও’র বিশেষ ফ্রিজ আইএলআর আছে। সেখানে ভ্যাকসিন রাখা হবে। এগুলো থেকেই আমরা ৩৬ হাজার জনকে প্রথম ডোজ দেব। একমাস পর তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেব।

তিনি বলেন, এক ভায়ালে ১০ জনকে দেওয়া যাবে। টিকাদানে যিনি খুব এক্সপার্ট তিনি ১০ জনের জন্য টানতে পারবেন। আর যারা একটু কম এক্সপার্ট তারা হয়তো এক ভায়ালে ৯ জনকে দিতে পারবেন। মোটকথা প্রক্রিয়াগত কারণে ১ দশমিক ১ ভাগ সিস্টেম লস তথা অপচয় হতে পারে।

একজন ব্যক্তিকে দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পর কতদিন সুরক্ষিত থাকবেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এটির কোনও ডাটা আমার কাছে নেই।

সিভিল সার্জন জানান, রেজিস্ট্রেশন করার পর অটোমেটিক্যালি মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে টিকা দেওয়ার দিনতারিখ। টিকা নেওয়ার আগে কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি না। তবে যিনি অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন তার শারীরিক কী কী সমস্যা আছে তা সেখানে উল্লেখ করবেন। কারও জ্বর, সর্দি, কাশি, মারাত্মক শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের সমস্যা থাকলে টিকা দেওয়া যাবে না। এছাড়া ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী মায়েরাও টিকা নিতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চাঁদপুরে ৭ হাজার ২০০ ভায়াল করোনার ভ্যাকসিন আসে। পরে সেগুলো স্বাস্থ্য বিভাগের ইপিআই ভবনে সংরক্ষণ করা হয়। সিভিল সার্জনসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চার জন ঊর্ধ্বতন চিকিৎসা কর্মকর্তা ঢাকা থেকে টিকা প্রয়োগের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় পর্যায়ে টিকা প্রদানে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

করেসপন্ডেট,৬ জানুয়ারি ২০২১