কচুয়ায় কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী

কচুয়ায় কেঁচো সার (ভার্মিং কম্পোস্ট) উৎপাদন করে স্বাবলম্বী কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী (৬৬)। কেঁচো সার উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন সৌদি আরবের খেজুরের বাগানসহ সমন্বিত কৃষি খামার। কেঁচো সার উৎপাদনে এখন মাসে আয় করেন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

কচুয়া পৌরসভার কোয়া চাঁদপুর গ্রামের কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী বাড়ির উঠানে দোচালা টিনের ঘরের নিচে স্থাপন করা হয় রিং স্ল্যাব। কৃষি অফিস থেকে প্রথমে ৪টি সিমেন্টের তৈরি রিং সø্যাব দিলেও পর্যায়ক্রমে কৃষক ১২২টি রিং স্ল্যাব তৈরি করে কেচোঁ সার উৎপাদন করেন। পরবর্তীতে হাউজের মাধ্যমে বর্তমানে কেচোঁ সার উৎপাদন করছেন । এসব রিং সø্যাবে তিন বছর ধরে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন তিনি। রিং সø্যাবে গোবর, মুরগির বিষ্ঠা ও কলাগাছ টুকরা টুকরা করে কেটে মিশ্রণ করা হয়। সব রিং সø্যাবে ছেড়ে দেয়া হয় কেঁচো। তারপর চটের বস্তা দিয়ে রিং সø্যাব ঢেকে রাখা হয়।

জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে পাওয়া ৪টি রিং এবং বাকি রিংগুলো নির্জ খরচে ও কেঁচো দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি শুরু করেন। প্রতি কেজি সার ২০ টাকা ও কেচোঁ ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এছাড়া কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী কেচোঁ সার উৎপাদনের পাশাপাশি মুরগীর ফার্ম ও বস্তায় আদা চাষ করেন। এদিকে কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, শহীদুল্লাহ মুন্সীর কেঁচো সার ফসলে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছি। পাশাপাশি তার সমন্বিত কৃষি খামার আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। তারা আরো বলেন, আমাদের দেশে যে হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে, তাতে ধানের চাষ করে লাভ হয় না। তাই রাসায়ানিক সারের পরিবর্তে এখন কেচোঁ সার ব্যবহার করছি।

কেচোঁ সার উদ্যোক্তা শহীদুল্লাহ মুন্সী জানান, প্রথম দিকে কিছুটা কষ্ট হলেও এখন আর পিছনে তাকাতে হয়নি। কৃষি বিভাগের সার্বিক পরামর্শে বাড়িতে আমি কেচোঁ সার উৎপাদন করি। কেচোঁ সার উৎপাদনে আমার স্ত্রী আমাকে প্রতিনিয়ত সাহায্য করে থাকেন। প্রতি মাসে যে টাকা আয় তাতে আমার সংসার চলে যায়। কেচোঁ সার উৎপাদন করে এখন আমি সাবলম্বী।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট সার ফসল উৎপাদনে খুবই উপযোগী একটি সার। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এ সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা কৃষক পর্যায়ে এ সারের ব্যবহার বাড়াতে কাজ করছি। সেই সঙ্গে উৎকৃষ্ট মানের ভার্মিং কম্পোস্ট সার প্রস্তুতে খামারিদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে আসছি। স্থানীয় কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সীর এরই মধ্যে ভার্মি কম্পোস্ট সার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে যারা বেকার ও হতাশ যুবকদের জন্য প্রকৃষ্ট উদাহরণ স্বাবলম্বী প্রবীণ কৃষক শহীদুল্লাহ মুন্সী।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ৯ জানুয়ারি ২০২৪

Share