জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহ অফিস:
এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তর বটগাছের ঐতিহাসিক দিক বিবেচনা করে অনেক স্থান থেকে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা আসেন। এর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ১৯৯০ সালেই বটগাছের পাশেই প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়। এর জন্য মল্লিকপুরের মৃত জহর আলীর স্ত্রী মোছা. কুন্টি বিবি ৩২ শতক জমি জেলা পরিষদের নামে দানপত্র লিখে দেন। তবে নানা জটিলতায় আজো সে রেস্ট হাউজটি চালু হয়নি।কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দেবপ্রসাদ পাল জানান, বটগাছটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ও পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে ১৯৯০ সালে সরকারি ভাবে একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণ না করায় রেস্ট হাউজের জানালা- দরজা চুরি হয়ে গেছে। ফলে দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। বটগাছটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেউ নেই। তাই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একজন স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। ঝিনাইদহ সামাজিক বনায়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থেকে বন বিভাগ প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বটগাছটি সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে ২০০৯ সালে। গাছটির আয়তন বৃদ্ধির জন্য নতুন করে দুই একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শুরু হবে। ইতিহাস খ্যাত এই বটগাছটি সংরক্ষণ এবং স্থানটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হলে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা এখানে ভিড় করবে। সরকারেরও রাজস্ব আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ১১ একর জমি জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ৪৫টি উপবৃক্ষের এ গাছটি অযন্তো অবহেলা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন ধ্বংস হতে চলেছে। তবে সরকারের বিশেষ বরাদ্ধ হিসাবে ১একরের বেশী জায়গা হুকুম দখল করা হয়েছে, গেজেট প্রকাশ হলে রক্ষনা-বেক্ষণ, পর্যটকদের জন্য বিশ্রামের ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগের কর্মকর্তারা। এটিকে পর্যটন এলাকা করার দাবি স্থানীয়দের। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বে মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলী মৌজায় সুইতলা মল্লিকপুরে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছটির অবস্থান। ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট উচ্চতায় ফাঁকা মাঠের মধ্যে প্রায় ৩’শ বছরের পুরনো এ বটগাছটি একের পর এক ঝুরি ছেড়ে বিরাট আকার ধারণ করে। ৩৪৫টি ঝুরি মাটির সাথে যুক্ত আর ঝুলন্ত রয়েছে ৩৮টি। জনশ্রতি আছে একটি কুয়ার পাড়ে বড় হয় গাছটি। ১১ একর জমির উপরে দাড়িয়ে থাকা গাছটি খন্ডখন্ড হয়ে ৪৫টি উপবৃক্ষে পরিণত হয়েছে । বটগাছটির দক্ষিণ-পূর্ব পাশ দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণের ফলে গাছটির বিস্তার বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতিনিয়ত কাটা হচ্ছে গাছের ডালপালা। ফলে ১৯৮২ সালে বিবিসির জরিপে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম খ্যাত এ বটগাছটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অযতœ অবহেলায় বিলীন হতে চলেছে।বটগাছটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ও পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে ১৯৯০ সালে সরকারীভাবে একটি রেষ্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ৩ একর জমি বাড়ানো হয় গাছটির বিস্তারের লক্ষ্যে। রক্ষনাবেক্ষণ না করায় রেষ্ট হাউজের জানালা দরজা চুরি হয়ে গেছে। ফলে দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থেকে বন বিভাগ প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বটগাছটি সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে। সংস্কারের আওতায় বাউন্ডারি প্রাচিল নির্মান, পাবলিক টয়লেট, আর,সি,সি বেঞ্চ নির্মান, গেট স্থাপন ও সেন্ট্রি পোষ্ট নির্মানের কাজ চলছে বলে যানাযায়। বটগাছের মধ্যে দুটি প্রজাতির এশটি অশ্বত্থ অন্যটি বট। এশিয়ার বৃহত্তম এ গাছটি বট প্রজাতির। বিস্তৃত বটগাছটির দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য,পাখির কলরব,ছায়াভরা শীতল পরিবেশ মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। ইতিহাস খ্যাত এই বটগাছটি সংরক্ষণ ও এ ঐতিহ্য ধওে রাখলে এখানে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। সরকারের ঘরেও আসবে রাজস্ব। এমনটি আশা করছে এলাকাবাসী ও দর্শনাথীরা।এসকল নির্মান কাজের মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ৩৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়াও অদূর ভবিষ্যতে এখানে প্রবেশের জন্য টিকিট পদ্ধতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান প্রকল্প সংস্লিষ্ঠ কর্মকর্তা জনাব মোঃ মইনুদ্দিন খান। উল্লেখ্য, এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছ হিসাবে খ্যাত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সুইতলা মল্লিকপুর বটগাছটি “স্বারক বট বৃক্ষ” হিসাবে সংস্কার ও সংরক্ষন করার প্রক্রিয়া চলছে।