ঈদকে ঘিরে দুবছরের ঘাটতি পোষানোর প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্যবসায়ীরা। বিগত দিনের ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠার প্রত্যাশা তাদের। করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আকাশচুম্বী প্রত্যাশা নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বড় লাভের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার ছেংগারচর বাজারের একমাত্র ফিক্সড প্রাইজ মার্কেট মোজাদ্দেদীয়া ছাইফয়া প্লাজার এমএস ফ্যাশনসহ ছেংগারচর বাজারের সকল ব্যবসায়ীরা। দোকানটিতে গিয়ে দেখা যায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। ভালো মানের সববয়সীদেও প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয়েছে মার্কেটটি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) স্টার সংবাদের সঙ্গে আলাপকালে আসন্ন ঈদুল ফিতরে তার প্রত্যাশার কথাটা ব্যক্ত করেছেন এমএস ফ্যাশন এর প্রোপাইটর আব্দুল মোতালেব সরকার ও পরিচলনাকারী আঃ ছাত্তার বাবুল।

এমএস ফ্যাশন এর প্রোপাইটর আঃ মোতালেব সরকার বলছেন, এবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। এমনকি বিধিনিষেধও নেই। ফলে ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য জমজমাট হবে বলে আমি আশা করছি। সবার একটাই লক্ষ্য করোনাকালে ইদে যে লোকসান হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা। কিন্তু এখনো ইদের বাজার জমেনি। মূলত স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে তাদের বেচা-কেনা। কিন্তু হঠাৎ বাজারে সব ধরনের পোশাকের দাম কিছুটা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের বাড়তি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়বে।

উপজেলার ঐতিহ্যবাহি ছেংগারচর বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখনো ইদের বাজার তেমনভাবে জমেনি। স্বাভাবিক সময়ের মতো চলছে বেচা-কেনা। ইদের সঙ্গে সম্পর্কিত কেনা-কাটা এখনো শুরু করেনি লোকজন। মাহে রমজানের প্রথম ১০ দিন অতিক্রম হলে ইদের কেনা-বেচা শুরু হতে পারে বলে আশা করছেন তার মতো আরো ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার একমাত্র ফিক্সড প্রাইজ (একদর) এমএস ফ্যাশনের প্রোপাইটর আঃ মোতালেব সরকার ও পরিচালনাকারী আঃ সাত্তার বাবুল। যদিও এখন একেবারেই কোনো ক্রেতা নেই। মোবাইলে ফেইসবুকে অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা দু’জনে। মোতালেব সরকারের প্রত্যাশা- রোজা ১০-১২টা পার হলে বেচা-কেনা শুরু হবে। তিনি বলেন,আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ছোট্র শিশু থেকে শুরু করে বড়দের পর্যন্ত তাদের চাহিদা মোতাবেক কেনাকাটার সকল প্রস্তÍুত সম্পন্ন কর রেখেছি।

ঈদের পাঞ্জাবী,সার্ট,প্যান্ট,শাড়ী,থ্রিপিসহ সবধরেন ঈদপোশাক পর্যাপ্ত রাখা আছে। ক্রেতাদের পচ্ছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে এবার আমরা ছোট থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত ভালো মানের ব্যান্ডের নতুন কালেকশন পোশাক মজুদ করা হয়েছে। আশা করছি ১০ রোজার পর ব্যবসা জমে উঠবে। যারা আসছেন, দর-দাম করে চলে যাচ্ছেন। ইদের এখনো অনেকদিন বাকি থাকায় মানুষ কিনছেও কম।

ব্যবসায়ী মোঃ মোতালেব সরকার আরও বলেন, সবাই বাজারে আসা-যাওয়া করছেন। এখনো কেনার মনোভাব আসেনি। কিন্তু গত দুই বছরের ইদে তেমন একটা ক্রেতা পাওয়া যায়নি। এবার যে ক্রেতারা আসছেন, সেটাই আশার দিক। আশা করছি, সামনে আরও বেশি ক্রেতা আসবেন, বেচাকেনা অনেক ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে দ্রুতই বেচা-কেনা শুরু হবে। তবে এক ইদে কখনোই গত দুই বছরের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ জীবন থেকে একবার যেটা যায়, সেটা আর ফিরে আসে না। বলতে পারি, ব্যবসায়ীরা সার্ভাইভ (টিকে থাকার লড়াই) করতে শুরু করবে।

এখন যারা কেনাকাটা করতে এসেছেন, তাদের অধিকাংশই ইদ উপলক্ষে নয়। মূলত সাধারণ কেনাকাটার জন্য আসছেন ক্রেতারা। তবে কেউ কেউ অবসর সময়ে মার্কেটে ঘুরছেন। সাধারণত নতুন কালেকশন দেখার জন্যই তাদের কার্যক্রম। তেমনি একজন সুমন। উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার আদুরভিটি গ্রাম থেকে এসেছেন তিনি। এমএস ফ্যাশন ঘুরে ঘুরে দেখছেন নতুন কী ধরনের পোশাক এসেছে। সুমন বলেন, ঈদে নতুন কালেকশন কি আছে। সেগুলো সরাসরি দেখতে এসেছি। দেখে যদি পছন্দ হয়, তবেই আমি কিনব। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য কিছু কাপড় কিনব।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ১১ এপ্রিল ২০২২

Share