শোপেনহাওয়ার দার্শনিক ও দুঃখবাদী ধারণার প্রবর্তক

জার্মান দার্শনিক শোপেনহাওয়ার ১৭৮৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। প্রথাবদ্ধ পড়াশোনায় তিনি বিশেষ মনোযোগী ছিলেন না। ১৮১১ সালে তিনি মেডিকেল-ছাত্র হিসাবে গোটিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বার্লিনে চলে যান। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করার পর ১৮৩১ সাল থেকে তিনি ফ্রাঙ্কফুর্ট আম-মাইন নগরে নির্জনবাস শুরু করেন।

শোপেনহাওয়ার দুঃখবাদী ধারণার প্রবর্তক। জীবন-জগৎ সম্পর্কে অবিশ্বাস ও হতাশাই হলো তার দর্শনের মূল উপজীব্য। তিনি বুদ্ধির পরিবর্তে মানুষের ইচ্ছাশক্তির ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, প্রকৃত পরমসত্তা একটি অন্ধ প্রেরণাদায়ক শক্তি, যা ব্যক্তি বা বেষ্টিতে ইচ্ছারূপে প্রকাশ পায়।

এ অন্ধ ইচ্ছাশক্তিই ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যক্তি বিভিন্ন প্রকার ইচ্ছাশক্তির দ্বারা তাড়িত হয়। সব ইচ্ছার তুষ্টি বিধান করতে পারে না বলেই ব্যক্তিকে দুঃখময় জীবনযাপন করতে হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ইচ্ছাকে দমন করা এবং লোভ-তৃষ্ণা, কামনা-বাসনার গ্রাস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।

তার এ তত্ত্ব ভারতীয় বৌদ্ধ দর্শনের নির্বাণ-তত্ত্বের সঙ্গে তুলনীয়। অন্যের ব্যথায় সমবেদনা জ্ঞাপনের ওপরই তার নীতিশাস্ত্র প্রতিষ্ঠিত।
শোপেনহাওয়ারের নিপুণ রচনাশৈলীসমৃদ্ধ পুস্তকগুলোর মধ্যে ইংরেজি অনুবাদে সর্বাধিক বিখ্যাত গ্রন্থ রয়েছে। পরবর্তী কালে দর্শনচর্চার ক্ষেত্রে ফ্রিডরিশ ভিলহেরম নিটশে ও জিগমু- ফ্রয়েড শোপেনহাওয়ারের দর্শনচিন্তার দ্বারা নানাভাবে প্রভাবিত হন।

১৮৬০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর শোপেনহাওয়ার মৃত্যুবরণ করেন।

সম্পাদনায় :আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪:০০ পিএম,২১ নভেম্বর ২০১৭,মঙ্গলবার
এজি

Share