Monday, 15 June, 2015 04:23:40 AM
চাঁদপুর টাইমস, ঢাকা:
‘আইনের শাসন কোথায়?’ এমন প্রশ্ন করলেন স্বয়ং পুলিশ প্রধান (আইজিপি)। বললেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত মহাসড়ক ব্যারিকেড দেয়া হলো। আর এতে যে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দেয়া হলো। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের ভোট বাড়ছে, কি কমছে, বলুন? আমার মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের ভোট কমছে।’
পটিয়ায় পুলিশের হাত থেকে আসামি ছাড়িয়ে নিতে ক্ষমতাসীন দলের মহাসড়ক অবরোধের ঘটনায় এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক। রোববার বিকেলে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের শ্যূটিং ক্লাবে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ ও রেঞ্জ পুলিশ আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আইজিপি বলেন, ‘পটিয়াতে এজাহারভুক্ত একটি মামলায় ক্ষমতাসীন দলের এক নেতাকে ধরায় ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যারিকেড দেয়া হলো। তাদের অনেক বুঝানো হলো তারা কোনো কথাই শুনলো না। আমি পুলিশ কমিশনারকে বললাম- তারা না শুনলে অ্যাকশানে যেতে হবে। তাদেরকে ধরতে হবে। মামলা দিতে হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তারা যদি বলতো ঠিক আছে ধরেছেন, এখন যাতে জামিন হয় তা একটু দেখবেন। তখন জামিন হওয়া বিষয়টা আমরা দেখতাম। কিন্তু তারা প্রশাসনকে জিম্মি করে থানা থেকে নিয়ে যাবে। তাহলে আইনের শাসন কোথায়?’
আইজিপি প্রশ্ন রাখেন, ‘সড়ক অবরোধ করে এই যে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দেয়া হলো। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের ভোট বাড়ছে, কি কমছে বলুন? আমার মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের ভোট কমছে। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের কারণে ভোট কমবে সেখানে পুলিশের নমনীয় ভাব দেখানো উচিৎ নয়। পুলিশ কমিশনারকে আমি তিরস্কৃত করেছি। পুলিশ কমিশনারকে বলেছি, আপনি দুর্বল কেন? আপনি তো ঘুষ খান না। আমার কাছে রিপোর্ট আছে। সরকারি চেয়ার ধরে চাকরি করেন কেন? অসুবিধা কি, আমি জীবনেও তো চেয়ার ধরে চাকরি করিনি।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘আইনের শাসন তখনই হবে যখন ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা এসব বুঝবেন। ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ব্যারিকেড দিয়ে আসামি ছাড়ানোর বিষয়টা তো লজ্জার বিষয়। ৫-১০ দিন জেল খাটলে অসুবিধা কি? তাছাড়া পলিটিশিয়ানরা জেল না খাটলে তো নেতা হবে না। নেতা তো হতেই হবে। পুলিশই তো নেতা বানায়। অনেক নেতা পুলিশ বানিয়েছে।’
নগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মণ্ডলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম তালুকদার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন, স্বাচিপ নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান প্রমুখ।