Home / শীর্ষ সংবাদ / নানা সমস্যায় জর্জরিত মতলব আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৬০ পরিবার
motlob asrayon
মতলব আশ্রায়ন প্রকল্প

নানা সমস্যায় জর্জরিত মতলব আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৬০ পরিবার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর, বেলতলী ও এখলাছপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ভারি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।

সুপেয় পানির অভাব, শৌচাগারগুলো ব্যবহার অযোগ্য, বেশিরভাগ ঘর জরাজীর্ণ এবং কর্মসংস্থানের অভাবে প্রতিনিয়ত সংগ্রামা করে বেঁচে আছেন তিন আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৬০ পরিবারের প্রায় ১ হাজার ১০০ মানুষ।

দুর্গাপুর, বেলতলী ও এখলাছপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘরের বেশিরভাগ টিনই নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে পানিতে ঘরের মেঝে ভিজে যাচ্ছে। এতে ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। দুর্গাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৭ ব্যারাকে মোট ৭০ ঘর রয়েছে।

এর মধ্যে ৩০-৩৫ ঘর একেবারেই বসবাসের অযোগ্য। এসব ঘরের পরিবার প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। ব্যবহারের জন্য রয়েছে ৭ টয়লেট। এর মধ্যে ৪টিই ব্যবহার অনুপযোগী। বাকি ৩ টয়লেট বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে ঠিক করে কোনো মতে কাজ চালাচ্ছেন। শৌচাগারের ময়লা চারদিকে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

সুপেয় পানির জন্য ৪ নলকূপ থাকলেও একটি মাত্র ব্যবহার উপযোগী। ফলে সুপেয় পানির অভাবে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন দুর্গাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিবাসীরা।

এখানকার বেশিরভাগ পুরুষেরই নেই কোনো কর্মসংস্থান। তাদের একমাত্র ভরসা পাশের মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে মাছ ধরা ও মাছ ধরার চাঁই বুনন। কিন্তু তা মাত্র বর্ষার তিন-চার মাসের জন্য। বছরের অধিকাংশ সময় তারা অন্যের জমিতে বদলা দিয়ে অথবা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি কালীপদ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। কাজ নেই, খাবার সমস্যাসহ সব সমস্যার কথা জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।’

বেলতলী আশ্রয়ন প্রকল্পে রয়েছে ৬ ব্যারাকে মোট ৬০ ঘর। এর মধ্যে ২০ পরিবার ব্যারাক ছেড়ে চলে গেছে। ৬ টয়লেটের মধ্যে ৩টি ব্যবহারের অযোগ্য। ৩ নলকূপের মধ্যে ২টি অকেজো। একটি দিয়ে কোনো মতে সুপেয় পানির কাজ চলছে। গোসলের একমাত্র ভরসা পাশের নদীর পানি। নারী ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা

। এখানকার অর্ধেক শিশুই স্কুলে যায় না। জন্ম নিয়ন্ত্রণে পরিবার পরিকল্পনার কোনো মাঠকর্মী সরকারি ওষুধপত্র নিয়ে অথবা কোনো পরামর্শ দিতে কোনোদিন যায়নি বলে অভিযোগ করেন বসবাসরত নারীরা।

এ প্রকল্পের সাবেক সভাপতি জহির উদ্দিন বলেন, আমরা সবসময়ই অবহেলিত। ঘরে বসবাস করা যাচ্ছে না, টয়লেটগুলো ব্যবহার অযোগ্য, বেশিরভাগ সময়ই কাজ থাকে না। এত সমস্যা নিয়েও নিরুপায় হয়ে আমাদের এখানে থাকতে হচ্ছে।

এখলাছপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে দেখা গেল একই চিত্র। সেখানে রয়েছে দুভাগে ১৩ ব্যারাকে মোট ১৩০ ঘর। বসবাসকারীদের বেশিরভাগ পুরুষই মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার কাজ করেন। বর্ষার সময় মাছ ধরে মোটামুটি জীবনধারণ করতে পারলেও মাছ ধরা যখন বন্ধ থাকে তখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয় তাদের। বেশিরভাগ টয়লেট ও নলকূপ ব্যবহার অনুপযোগী। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ৬ শতাধিক বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আক্তার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বেলতলী আশ্রয়ন প্রকল্পের লোকজন আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের সমস্যাগুলো অবগত হয়েছি। সবগুলো আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পুনঃর্সংস্কারসহ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রতিবেদক- খান মোহাম্মদ কামাল
: আপডেট, বাংলাদেশ ৫: ৪০ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শুক্রবার
ডিএইচ

Leave a Reply