Home / চাঁদপুর / আলু চাষে পিছিয়ে নেই চাঁদপুরের কৃষকরা
potato
ফাইল ছবি

আলু চাষে পিছিয়ে নেই চাঁদপুরের কৃষকরা

দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যয় আলু চাষে পিছিয়ে নেই চাঁদপুরের কৃষকরা। আলু উৎপাদনকারী গ্রামাঞ্চলের গোটা জনপদ এখন আলু চাষে কর্মচঞ্চল। এ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু না হলেও চাঁদপুরের কৃষকরা আলু চাষ করে থাকেন।

বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে ।

বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল গুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী, মুন্সীরহাট, মতলব, নারায়ণপুর ,কুমারডুগি, শাহাতলী, কেতুয়া এলাকায়।

জেলার ৮ উপজেলার দিগন্ত বিস্তৃত ক্ষেত জুড়ে এখন চলছে শুধু আলুর আবাদ। কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ কাজে। আর বাড়িতে নারীরাও বীজ আলু কাটার কাজে ব্যস্ত। চাঁদপুরে আলুর ভালো ফলন ও আলু চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকরা এবারও বেশ উদ্দীপনা ও উৎসাহ নিয়ে আলু চাষ করছেন।

এদিকে অন্যান্য বছর আগাম আলু চাষ করতে পারলেও এবার তা সম্ভব হয়নি। এবার জমি থেকে বর্ষার পানি দেরিতে নামায় আগাম আলু চাষ ব্যাহত হয়। এখন জেলার ৮টি উপজেলায় পুরোদমে আলু চাষ শুরু হয়েছে। আলু উত্তোলন শুরু হবে আগামী মার্চ- এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে। আলু রোপণের পর তা পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে সময় লাগে তিনমাস। আলু আবাদে জেলার কৃষকদের সহায়তা করছেন বাড়ির নারীরাও। তারা বীজ আলু কেটে দিচ্ছেন। কাটার পর শ্রমিকরা তা জমিতে নিয়ে রোপণ করছেন। বর্তমানে বাজারে আলুর চড়া দাম। বীজ আলু কাটার পর অবশিষ্ট কাটা আলু ব্যবসায়ীরা বাড়িতে গিয়েই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে প্রতিবছরের ন্যয় এবারও চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে আলু চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

চলতি শীত মৌসুমে চাঁদপুরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭শ’৬০ মে.টন। এতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১২ হাজার ১শ’ ৮৮ মে.টন ।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক আলু চাষাবাদ করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে , চাঁদপুর সদরে এবার ১ হাজার ৭শ’ ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯ শ’ মে.টন।

মতলব উত্তরে ৫শ ’৭৩ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪শ’ ৬০ মে.টন ।

মতলব দক্ষিণে ৪ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ হাজার মে.টন ।

হাজীগঞ্জে ১ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ২ শ’ মে.টন ।

শাহারাস্তিতে ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার মে. টন।

কচুয়ায় ৩ হাজার ৯শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৬ শ’ মে.টন।

ফরিদগঞ্জে ১শ’ ২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪শ’ মে.টন।

হাইমচরে ১শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২শ’ মে.টন।

চাঁদপুরে আলু চাষির সংখ্যা আগের তুলনায় কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বয়োবৃদ্ধ কৃষকরা। তাদের দাবি, আগের মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। গ্রামের অনেক কৃষক পরিবারের একাধিক সদস্য প্রবাসী হয়ে গেছেন। অনেকে আবার আর্থিক অনটনে থাকায় চাষাবাদ ছেড়ে দিয়ে জমি বর্গা চাষে ভাড়া দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জমি চাষে টাকা খাটাচ্ছেন।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬: ৫০ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply