Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / জন্ম হয়েছিলো জময হয়ে, সেভাবে দু’জনের মৃত্যুও!
জন্ম হয়েছিলো জময হয়ে, সেভাবে দু’জনের মৃত্যুও!

জন্ম হয়েছিলো জময হয়ে, সেভাবে দু’জনের মৃত্যুও!

পৃথিবীর প্রথম মানব আদম (আ.) এর সন্তানদের মতো একসাথে ছেলে এবং মেয়ে হয়ে মা-বাবার কোলজুড়ে এসেছিলো তারা দু’জন। মায়াবী এ পৃথিবীতে সময়ও কাটলো তাদের বছ দেড়েক। তাই বলে মৃত্যুও তাদের হবে একসাথে। সৃষ্টিকর্তার এমন লীলাখেলা আমরা প্রত্যক্ষ করে আফসোস করি কিংবা চোখের পানি ফেলি।

এমন অনাকাংখিত কিছু ঘটে গেলে শোক শুধু পরিবারের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না, সেটি ছড়িয়ে পড়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও সমাজের অন্যান্য বাসিন্দাদের মাঝেও।

সোমবার (৩ অক্টোবর) এমনি দুটি মর্মান্তিকর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের বাখরপাড়া গ্রামে।

জানা যায়, বাখরপাড়া গ্রামের হাজী বাড়ির আনিসুর রহমানের সংসারে ঠিক দেড় বছর আগে যমজ দু’বাচ্চার জন্ম হয়। ভাগ্যবান এ পরিবারের যমজ বাচআর মধ্যে একজন ছেলে আর একজন মেয়ে বাচ্চা জন্মায়। নাম রাখা হয় মুস্তাফিজুর রহমান ও মরিয়ম আক্তার মুনতাহা।

দু জনের বয়স ১৮ মাস হলেও পৃথিবীতে আসার ব্যবধান ভাই-বোনের মধ্যে মাত্র আধা ঘন্টা। বাবা-মায়ের কোলজুড়ে থাকা সেই যমজ দু ভাই-বোন বড় হতে থাকে।

গেলো ক’দিন আগে তাদের ১৮ মাস মানে দেড় বছর পূর্ণ হয়। সোমবার সকালে মায়ের কাছে থেকেই নাস্তা খাওয়া শেষের মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পানিতে ডুবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে মুস্তাফিজ আর মরিয়ম। আর তখন থেকেই ওই পরিবারের ইতিহাসে নেমে আসে এক কালো অধ্যায় যা ওই পরিবারকে যুগ-যুগান্তর শোকাতুর ইতিহাস হিসেবে মনে রাখতে হবে।

সরজমিনে গতকাল সোমবার সকালে হাজী বাড়িতে গেলে দেখা যায় পুরো বাড়িতে লোকে লোকারণ্য। আর ঘরের উত্তর পাশে রান্না ঘরের সামনে দেখা যায় নিহত শিশু দুটির মা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। বাবার হাউ-মাউ কান্না ঘরের ভেতর থেকে শোনা যাচ্ছিলো। আর ঘরের পশ্চিম পাশে বাড়ির উঠানে দুটি পাটির উপর শিশু দুটির লাশ চাদর দিয়ে ঢেঁকে রাখা হয়েছে। যে কোনো পাষাণ ব্যক্তি এ হৃদয় বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে তার চোখে একবারের জন্যে হলেও পানি চলে এসেছে।

শিশুদের দাদা হাজী আঃ রব জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বউ মা (নিহত শিশুদের মা) নাতি-নাতনিকে নিজের হাতে নাস্তা খাইয়ে উঠানের দিকে খেলতে পাঠায়। এর মধ্যে কোনো এক ফাঁকে ঘরের কাছের পুকুরের পাকা ঘাটে দিয়ে পানিতে পড়ে যায় দু’ ভাই-বোন। কাজের ফাঁকে কি কারণে যেনো পুকুরের দিকে আমার নজর চলে গেলে দেখি নাতিটা পানিতে ভাসছে। চিৎকার দিয়ে পানিতে নামার আগে একটু দূরে দেখি নাতনির লাশ ভাসছে। এ কথা বলে আ. রব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

শিশু দুটির মৃত্যুর বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী বলেন, ‘আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে ডুবে যাওয়া শিশু দুটির দাফন করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২:৫০ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply