চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল-এন্নাতলী মাঠের একটি হালটে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী (২২) এর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে ঐ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ওই যুবক এন্নাতলী পাটওয়ারী বাড়ির আবুল বাসারের ছোট ছেলে। ওই পরিবারের চারজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। নিহতের ভাই খোরশেদ আলম,এক বোন ও বাবা আবুল বাসার জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। এ বিষয়ে নিহতের বাবা আবুল বাসার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বরে জানা গেছে ।
নিহতের বাবা আবুল বাসার মঙ্গলবার সকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,‘আমার ছেলেকে খুন করেছে। সোমবার (২৭ মে) রাতে কাউছার হোসেন নামের একনেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা হুমকী-ধমকী দেয়।’
তিনি আরো জানান,‘আমার প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য টাকা দিয়েও ভাতা পাইনি। ওই ভাতার ঘটনা নিয়ে আমার ছেলে প্রতিবাদ করেছিল। আর এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে ঐ কাউছার হোসেন আমার ছেলেকে খুন করে।’
এদিকে ঐ ইউনিয়ন তরুণ লীগের সভাপতি কাউছার হোসেন মুঠোফোনে বলেন,‘ সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের মহল্লার দোকানে প্রায় শতাধিক জনসমুক্ষে নুরুল ইসলামের একটি ইভটিজিংয়ের ঘটনায় শালিসি বৈঠক হবার কথা ছিল। পরে নুরুল ইসলামের বাড়ির লোকজন বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দেয়। নুরুল ইসলাম এলাকার আলাউদ্দিন ফরাজীর মেয়েকে ইভটিজিং করেছিল। তারপর আমি হাজীগঞ্জ বাজারে চলে আসি। রাত দেড়টায় বাসায় গিয়েছি। আমি নুরুল ইসলামের হত্যার ঘটনার সাথে মোটেই জড়িত নই।’
ভাতার কার্ডের প্রসঙ্গে কাউছার হোসেন বলেন,‘ তারা আমার কাছে কোনো টাকা দেয় নি। আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক নেতার কাছে দিয়েছে। তবে তারা এখনো কোনো ভাতার কার্ড পায় নি ।‘
অথচ নিহত প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের এক ভিডিও সাক্ষাতকারে দেখা গেছে,ওই নেতা কাউছার হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য ২৭’শ টাকা দিয়েছে। তারপরও কার্ড না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিজির কাছে অভিযোগ দিয়েও সুরাহ পায় নি ।
ঘটনাস্থলে সহকারী পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন,থানা অফিসার ইনচার্জ মো.আলমগীর হোসেন রনি ও উপ-পরিদর্শক জাফর আহমেদ,ফারুক হোসেন পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা জানান, নিহতের মৃতদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। শরীরে কোনো জখম নেই। ধারণা করা হচ্ছে-তাকে পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়। ঘটনাস্থল থেকে চশমা উদ্ধার করা হয়েছে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ মে ২০১৯