চাঁদপুর

চাঁদপুরে ৫ হাজার ২শ হেক্টরে লক্ষাধিক মে.টন শাক-সবজি উৎপাদন

চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা,পদ্মা,মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি,আউস,আমন ও বোরোর মত কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক এ শাক-সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের এক এ তথ্য মতে, চাঁদপুরে এ বছর শাক-সবজির চাষাবাদ ৫ হাজার ২ শ’ ১০ হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮ হাজার ৬ শ’২৯ মে.টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের এক তথ্যে জানা গেছে ।

ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা, মরিচের পরেই শাক-সবজির এ জেলার স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক। চাঁদপুরে ১ লাখ ৮ হাজার ৬ শ’ ২৯ মে. টন শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ হাজার ২শ’ ১০ হেক্টর ।

মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও দিন রাত পরিশ্রম করেই তারা এ শাক-সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে। কোনো কোনো এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে তারা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষাবাদ করে আসছে। তাদের জীবিকার প্রধান বাহন কৃষি ,সবজি চাষাবাদ ও হাঁস ,মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালন ।

বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১ টি চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। নারীরাই এসব শাক-সবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। গরু,ছাগল ,হাঁস ,মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালনে মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রণীভূমিকা পালন করে আসছে।

আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ,পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।

বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক শাক-সবজির উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। চাষীরা ঋণসহায়তা পেলে শাক-সবজি চাষাবাদে আরোও উৎসাহী হতো।

চরাঞ্চলগুলি হলো- মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও চরভৈরবীর বাবুরচর ইত্যাদি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে, চাঁদপুর সদরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৭০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৫ শ’ ১৮ মে.টন।

মতলব উত্তরে চাষাবাদ ৯ শ’ ৫০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৮ শ’ ৮ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ২ শ’৭০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৬ শ’২৯ মে.টন।

হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৬ শ’ ১৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮শ’ ২৩ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ৩ শ’ ৯৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২শ’ ৩৬ মে.টন।

কচুয়ায় চাষাবাদ ৪ শ’ ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৫ শ’ ৪৯ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ৭ শ ’৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ২ শ’ ৬৩ মে.টন। হাইমচরে চাষাবাদ ৭ শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮ শ’ ৩ মে.টন।

শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে– ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন, লালশাক, লাউ, ডাটা ,ঠেঁড়স, বেগুন ,ধনিয়া পাতা, ধুন্দুল,ঝিঙে ,কই বা চিচিঙ্গা , চাল কুমড়া , কুমড়া, সিম, মুলা,গাঁজর,খিরা, টমেটো, করলা, পালং শাক,বরবটি প্রভৃতি।

আসন্ন রমজানে জেলার সব উপজেলায় কম-বেশি এসব শাক-সবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। আসন্ন রমজানে চাঁদপুরের সবজি চাষীদের উৎপাদিত সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে এর বেশ লাভবান হচ্ছে । আবহাওয়া এবার অনুকুলে থাকায় শাক-সবজির ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে বলে জানা যায় ।

চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোসহ কুমারডুগি,মহামায়া , দেবপুর, মাস্টার বাজার, সুন্দরদিয়া এলাকায় ব্যাপকহারে ও বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা এসব শাক-সবজির চাষাবাদ করে থাকে ।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
এপ্রিল ২৯ , ২০১৯

Share